আজকের পৃথিবী আমাদের পৃথিবী
Present world is our world!
প্রথম পাতা
নাশকতার কাঁটা মাড়িয়ে এগিয়ে যেতে হবে ।। ড. মিল্টন বিশ্বাস
২৪ জুলাই(২০২৪) ফেসবুক সক্রিয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুষ্কৃতিকারীদের সমর্থক গোষ্ঠী লিখতে শুরু করেছে, ‘‘জুলাই-এর পর কিন্তু ১৫ আগস্ট।’’
অর্থাৎ তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ১৯৭৫ সালের ঘটনা স্মরণ করিয়ে হুমকি দেওয়া শুরু করেছে। এতোদিন কষ্ট করে যে বাংলাদেশের উন্নয়ন করলেন,
মানুষের ভোট ও ভাতের দাবি নিয়ে লড়াই করলেন জননেত্রী- মুহূর্তে ভুলে গিয়ে স্পর্ধা দেখানো আরম্ভ করেছে বিপথগামীরা।
আসলে বেঈমান ও নিমকহারাম জাতির সন্তান এরা। সামষ্টিক মঙ্গল চিন্তায় যেখানে শেখ হাসিনা দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন সেখানে মীমাংসিত
এবং তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে ১৫ আগস্টের নির্মম ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেওয়া কতটা অপরাধ এটাও কি তাদের বুঝিয়ে দিতে হবে?
এদের মগজ ধোলায় করেছে কারা? নিশ্চয় বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের দোসররা। নিশ্চয় জামায়াত-বিএনপি দলের নেতা-কর্মীরা।
এজন্য নাশকতার কাঁটা মাড়িয়ে এগিয়ে যেতে হবে উন্নয়নের উচ্চ শিখরে।
সম্পূর্ণ লেখাটি পড়ুন আইনি প্রশ্ন ।। ব্যারিস্টার নিঝুম মজুমদার
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধী সাইদীর একান্ত ভক্ত রংপুরের আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে এটা একটা আইনি পোস্ট।
মূলত আইনজীবীদের সাথে একটা আলাপের জন্যই এই লেখাটা।
ফ্রেন্ড লিস্টে যারা নাই, তারা মেসেজ দিতে পারেন কিংবা শেয়ার দিয়ে আলাপ শুরু করতে পারেন।
আইনজীবী ছাড়া আলোচনায় অংশ নেয়াটা একটু ঝুঁকির কেননা পুরা বিষয়টা একটা মৃত্যুর ক্ষেত্রে আইনি আলাপ সংক্রান্ত।
আপনি বিষয়টা না জানলে আপনার কাছে বোরিং লাগতে পারে। অদ্ভুত লাগতে পারে। সো, এড়িয়ে যেতে পারেন।
আমি সাঈদের মৃত্যুর পুরো ভিডিওটা দেখলাম। যদিও তার মৃত্যুর পরের ময়না তদন্ত রিপোর্ট আমার কাছে নাই।
সাঈদ দুই হাত বাড়িয়ে পুলিশকে নির্দেশ দিচ্ছিলো যে গুলি করেন। ( আমার এই পর্যবেক্ষণ কি ঠিক?)
পুলিশ গুলি ছোড়ে। জানা যায় এটি রাবার বুলেট। অভিজ্ঞরা বলতে পারবেন এটি কি বুলেট।
রাবার বুলেটে সাধারণত মানুষ মারা যায়না। যদি যায়, অভিজ্ঞরা আলাপ করতে পারেন।
সাঈদের হাতে গুলি লাগলো। পায়ে লাগলো। সাঈদ বসে পড়লো।
কিছু তরুন বয়সী ছেলেরা সাঈদকে মাথা নীচু করে পা উপরে তুলে দ্রুত হাটা ধরলো।
বহনকারী তরুনেরা সাঈদকে দুইবার মাটিতে ফেলে দিলো। সাঈদের মাথা ছিলো নীচে। পা উপরে।
প্রশ্ন হতে পারে-
(১) সাঈদের মৃত্যুতে অপারেটিং এন্ড সাবস্টেন্সিয়াল কারন কোনটা? পুলিশের রাবার বুলেট নাকি তরুনদের দুইবার ফেলে দিয়ে আঘাত করা?
(২) এখানে কি but for test এপ্লাই হতে পারে?
(৩) Chain of causation কি broken already?
(৪) Novus actus interveniens থিয়োরি নিয়ে কি আলাপ উঠতে পারে এখানে? হলে সেটার ব্যাখ্যা কেমন হতে পারে?
(৫) যে তরুণেরা সাইদকে নিয়ে গেলো, তারা তাকে কোথায় নিয়ে গেলো শেষ পর্যন্ত? তাদের কি কোনো কিছু ভূমিকা ছিলো সাইদকে দুইবার মাটিতে ফেলে দেয়া ছাড়া?
(৬) বহন করা তরুনরা কি একিউসড হতে পারে, রাবার বুলেট ছোড়া পুলিশ সদস্যের সাথে সাথে?
(৭) সাইদের ময়না তদন্ত রিপোর্টে কি আছে?
(৮) এই ঘটনায় রিলেটেড কি কি কেইস রেফার্ড হতে পারে? আপনি ডিফেন্স আইনজীবি বা প্রসিকিউশন আইনজীবী হলে কি স্ট্রাকচার ফর্ম করতেন মামলার যুক্তি অংশে?
এটা পিওর আইনী আলাপ। বিষয়গুলো জানা না থাকলে আলাপ থেকে বিরত থাকার সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাই।
কোটার আদ্যপান্ত
রেদওয়ান জুয়েল: সরকারী চাকরীতে কোটার পরিমাণ কমিয়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়ার দাবিতে বাংলাদেশ কোটা সংস্কার আন্দোলন সংগঠিত হয়। ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট তিনবার কোটা সংস্কারের জন্য আন্দোলন করা হয়েছিল।
আপাত দৃষ্টিতে এখন অবধি এই আন্দোলনের পক্ষে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা এবং বিপক্ষে রয়েছে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাধীন বাংলাদেশ সরকার, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের সমমতাবলম্বী সংগঠনসমূহ, যদিও সরকারও কোটার পক্ষেই কথা বলেছে।
সর্বপ্রথম কোটা সংস্কার আন্দোলন হয় ২০১৩ সালে এরপর ২০১৮ সালে। আন্দোলনের পর আন্দোলনকারীদের পক্ষে পরিপত্র ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক এই পরিপত্রটি ২০২৪ সালের অবৈধ ঘোষণা করায় পুনরায় আন্দোলন শুরু হয়।
২০১৩-এ বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ছিল দেশের সরকারি খাতে চাকরি সংক্রান্ত সরকারের নীতির বিরুদ্ধে একটি আন্দোলন। প্রথমে শাহাবাগ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মূল প্রতিবাদ আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে এবং একই ধরনের দাবি নিয়ে মিছিল বের করে। এটি ২০১৩ সালে ঢাকার শাহবাগে বিক্ষোভের সামসময়িক একটি আন্দোলন, যেটি প্রায় একই সময়ে একই স্থানে হয়েছিলো।
২০১৩ সালের কোটা আন্দোলন সফলতার মুখ না দেখলেও এর ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালে বাংলাদেশে পুনরায় কোটা নিয়ে বড় ধরনের আন্দোলন সংগঠিত হয়।
২০১৮-এ বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ছিল বাংলাদেশে সব ধরনের সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কোটার ভিত্তিতে নিয়োগের প্রচলিত ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে সংগঠিত একটি আন্দোলন।
১৯৭২ সাল থেকে চালু হওয়া কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে চাকরি প্রত্যাশী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতৃত্বে ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ধারাবাহিকভাবে বিক্ষোভ
এবং মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। লাগাতার আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের ফলে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৪৬ বছর ধরে চলা কোটাব্যবস্থা বাতিল ঘোষণা করে সরকার।
পরবর্তীতে ২০২৪ সালের জুন মাসে বাংলাদেশ হাইকোর্ট বাতিলকৃত কোটা পুনরায় বহাল করে। যার ফলে পুনরায় ছড়িয়ে পড়ে আন্দোলন।
এই আন্দোলনে সারা বাংলাদেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাধারণ শিক্ষার্থীদের দ্বারা শুরু হলেও পরবর্তীতে নটরডেম কলেজ, সেন্ট যোসেফ কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ,
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আইডিয়াল কলেজ, ঢাকা সিটি কলেজ, বিএএফ শাহীন কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি,
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ, আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দনিয়া কলেজ, ডাঃ মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ, এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি,
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, সিটি ইউনিভার্সিটি,ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস
এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি, সিভিল এভিয়েশন স্কুল এন্ড কলেজ, তেজগাঁও,মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সহ আরো অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করে।
পরবর্তীতে কোটাবিরোধী আন্দোলনটি সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে ছিনতাই করে নিয়ে যায় জামায়াত-শিবির ও বিএনপি। ফলশ্রতিতে শতাধিক ছাত্রের প্রাণহানী ঘটে এবং সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড বহিরাগত সন্ত্রাসীরা পুড়িয়ে দেয়।
বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী সহিংসতা ।। হাসানআল আব্দুল্লাহ
আমি একজন শহীদের সন্তান হয়েও কোটা সংস্কারের পক্ষে, তবে সেটা পুরোপুরি তুলে দেবার যুক্তি দেখি না। ফলত, এই আন্দোলন করতে গিয়ে যে সব ছাত্র নিহত হয়েছে, পূর্ণ তদন্ত করে হত্যাকাণ্ডে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে যারা ইন্ধন দিয়ে সশস্ত্র আন্দোলনে পরিণত করেছে তাদেরও খুঁজে বের কোরে শাস্তির আওতায় আনা হোক। আর যে সব ছাত্ররা নিজেদের বা অন্যদের 'রাজাকার' বলছে, তাদের বলবো, বাবারা তোমরা এই ঘৃণা শব্দটি দ্বারা নিজেদের ক্ষোভ তুলে ধরার আগে ৭১-এ ওই
পশুদের পৈশাচিকতা আরেকবার স্মরণ করো। দেশকে ভালবাসো, 'রাজাকার'কে নয়, কারণ তোমরা মেধাবী। কোটা প্রথার সংস্কার হোক, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের এই কোটার দরকার নেই। তারা গত ৫৩ বছরে যেমন নিজেদেরকে প্রমাণ করেছে, ভবিষ্যতেও তাই করবে। আমার বাবার রক্তে দেশ স্বাধীন হয়েছে, এর চেয়ে বড়ো কিছু আমার ও আমার সন্তানের চাওয়ার নেই।
কোটা সংস্কারের বিষয়ে আদালতের রায়ের পর ।। আসলাম আহমাদ খান
কোটা সংস্কারের বিষয়ে আদালতের রায়ের পর ছাত্র আন্দোলন আস্তে আস্তে স্তিমিত হয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ শিক্ষার্থীদের দাবী পূরণ হয়েছে। তলে তলে সমঝোতায়ও হয়েছে। এই সমঝোতা তো তলে তলে হওয়ার প্রয়োজন ছিল না। প্রকাশ্যেই হতে পারতো। শিক্ষার্থীরা দেশ প্রেমিক। একথা সত্য যে, তাদের ঘাড়ের উপর অদৃশ্য শক্তি ভর করেছিল। কিন্তু সে দোষ তাদের না। একটা যৌক্তিক আন্দোলনে সকল শ্রেণীর মানুষ যুক্ত হতে পারে।আন্দোলনকারীরা বলতে পারবে না যে, অমুক সমর্থন দিও, তমুক সমর্থন দিও না। তারা ক্ষণে ক্ষণে দাবী পরিবর্তন করেছে। কারণ তারা সরকারকে আস্থায় নিতে পারছিলো না। এই অনাস্থার জায়গাটা সরকার তৈরী করেছে। শুরুতেই শিক্ষার্থীদের দাবী মেনে নিলে ওরা ঘরে ফিরে যেতো। আর সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরে গেলে মাঠে থাকতো শুধু ভিন্ন উদ্দেশ্য সাধনকারীরা। তারা তো ১৭ বছর ধরেই মাঠে আছে। কোন লাভ তো হচ্ছিলো না। এবারও হতো না। বরং শিক্ষার্থীদের দাবী মেনে নিলে সরকারের জনপ্রিয়তা বাড়তো। বিরোধী দলকে আরও ২৭ বছর মাঠের বাহিরে থাকতো। কিন্তু সরকারের ভুলের কারণে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। একাত্তরের প্রফেশনাল গোর খোদকদের ক্ষুধিত আত্মারা এখনও সক্রিয় আছে— এটা কি সরকারের অজানা ?
আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে তারা বিভিন্ন জায়গায় ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালাচ্ছে। রাজধানীতে BTRC এর টাওয়ার ধ্বংস করেছে। গান পাউডার দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। গান পাউডার দিয়ে টাওয়ার পুড়াতে প্রফেশনাল দুষ্কৃতিকারীর প্রয়োজন। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষে এটা সম্ভব নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং গণভবনের ওয়েবসাইট হ্যাক করা, টোল প্লাজা লুট করা, জেলখানায় আগুন দিয়ে বন্দীদের ছেড়ে দেওয়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাজ নয়।
আমেরিকার পাতাল রেলের চেয়ে উন্নত মেট্রোরেলকে ধ্বংস করেছে। মেট্রো রেলের দু’টি স্টেশনের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আনতে কমপক্ষে আরও মিলিয়ন ডলার খরচ হবে। সময় লাগবে এক বছরের বেশী।
BTRC -এর এই টাওয়ারের মাধ্যমে সাড়ে ছয় লাখ মানুষ আউট সোর্সিংয়ের কাজ করতো। ৫- নেটওয়ার্কের সঞ্চালন হতো এই টাওয়ার থেকে। আমেরিকা, ইসরায়েল, ইন্ডিয়ার পর বাংলাদেশে একমাত্র ৫-জি টাওয়ার ছিল। শেখ হাসিনা সরকারের যুগান্তকারী সাফল্যে একটি এই ৫-জি টাওয়ার।
ঘরে বসে মানুষ মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করতো। তাদের আয়ের উপর নির্ভরশীল ছিল তাদের পরিবার। ধরা যাক এই সাড়ে ৬ লাখ মানুষের প্রতিজনের সঙ্গে ৩ জন নির্ভরশীল আছে, সাড়ে ছয় * গুণ তিন অর্থাৎ ২০ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান বিনষ্ট করেছে পরিকল্পিতভাবে। অনলাইন মার্কেটিং , ফেসবুক , ইউটিউব থেকে যার ইনকাম করতো সেগুলো এফেক্টেড হবে। BTRC -এর এই ৫-জি টাওয়ার নির্মাণ করতে ৬ বছর সময় লেগেছে, আরও ৬ বছর লাগবে রিবিল্ট করতে। খরচ লাগবে ২৫০ মিলিয়ন অর্থাৎ ২৫ হাজার কোটি টাকা। টাকা না হয় যোগাড় করলো , কিন্তু এর মাঝে এর মাঝে আউট সোর্সিংয়ের অর্ডারগুলো কেনসেল হয়ে যাবে। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, আর আমরা বারবার পিছিয়ে যাচ্ছি। ২০০০ সালে খালেদা জিয়া সাবমেরিন ক্যাবল এর সংযুক্ত হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ হেলায় হাতছাড়া করেছিল, ২০০৯ সালে শেখা হাসিনা ক্ষমতার এসে আরও অনেক বেশী টাকা খরচ করে সেই নেটওয়ার্কের সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করেছিল। এখন ধ্বংস করা হয়েছে BTRC ‘র টাওয়ারটি।
শুধু BTRC টাওয়ার নয়, এ দেশটিকে ধ্বংস করার জন্য সমস্ত প্রস্ততি নিয়ে তারা মাঠে নেমেছিল, তা নাহলে জেলখানায় আগুন দেবে কেন ? দেশের রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ি, আগুনে পোড়া যানবাহনের দিকে তাকালে মনে হবে যুদ্ধ বিধ্বস্ত কোন দেশ। কোমলমতি ছাত্রদের কাছে যেটা আন্দোলন, জামাত- শিবিরের কাছে সেটা যুদ্ধ, ধ্বংসাত্মক এই যুদ্ধের মাধ্যমে ওরা একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে চায়।
(২৩ জুলাই, ২০২৪)
কোটা সংস্কার আন্দোলনের ফলাফল:
মৃত এক শতাধিক
সারাদেশে সেনা মোতায়েন
কার্ফিউ জারি
কোর্টের রায়: ৯৩ শতাংশ সাধারণ কোটা, ৫ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধ কোটা, ১ শতাংশ নৃগোষ্ঠী, ১ শতাংশ প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গ
এক নজরে ছাত্র আন্দোলনের সুযোগে সন্ত্রাসীদের দ্বারা চালানো ধ্বংসযোগ্য
শুধু রাজধানী জুড়ে আন্দোলনকারী ছাত্রদের ছায়ায় লুকিয়ে থাকা সন্ত্রাসীদের লুটপাট ধর্ষণসহ নাশকতার চিহ্নগুলো এরকম। মহাখালির ডাটা সেন্টার ধ্বংস করা হয়েছে, ইন্টারনেট বন্ধ; মেরামতে সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী।
ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় প্রতিদিন দেশের ক্ষতি ৬৫০ কোটি টাকা। বিএনপি ও শিবির হলে হলে ছাত্রলীগের কর্মীদের মারধর করেছে। শিক্ষক, হাউজ টিউটরসহ সকলেই এদের হাতে লাঞ্ছিত হয় বলে জানা গেছে। পুলিশ হত্যা করেছে।
এমনকি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন পুলিশকে জোর করে রাস্তায় এনে পিটিয়ে মারেছে। আগ্নেয়াস্ত্র, ছুরি দাসহ বিভিন্ন ধারালো অস্ত্র নিয়ে হত্যা করে। মেট্রোরেলে, ফ্লাইওভার, বিটিভি, বিআরটিসি, বিটিআরসি, সেতু ভবন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর,
ঢাকা মেডিকেল কলেজ, কভিড চিকিৎসার জন্য ডেডিকেটেড হাসপাতালসহ শত শত গাড়ি বাসে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। গলাকেটে মানুষ হত্যা করে ফেলে রাখা হয়েছে। ঢাকায় একজন আওয়ামী লীগের কর্মিকে হত্যা করে গাছে ঝুলিয়ে রেখেছে। চট্টগ্রামে
ছয়তলা থেকে ফেলে দিয়ে ছাত্রলীগের কর্মীদের হত্যা করা হয়ছে। ব্যাপক ভাগচুর ও অগ্নি সংযোগ করা হয়েছে বগুড়া, নারায়গঞ্জ, নরসিংদিতসহ নানা শহরে। সারা দেশে অন্তত ৪০টি ডাটা সেন্টার আংশিক অথবা সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দয়া হয়েছে।
মিরপুরে মেট্রোরেলের এতোটাই ক্ষতিসাধন করা হয়েছে যে কাজীপাড়া ও মিরপুর ১০ স্টেশন পুনরায় চালু করতে প্রায় একবছর লেগে যাবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন জো বাইডেন
এনওয়াইনিউজ৫২:
অবশেষে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি দেলওয়ারে নিজ বাসা থেকে এক বার্তায় রোবিবার, ২১ জুন তাঁর এই সিদ্ধান্তের কথা জানান।
এর আগে তিনি করোনা আক্রান্ত হয়ে আইসোলেশনে নিজ বাসাতেই অবস্থান করছিঁলেন। তিনি প্রথম ডিবেটে কিছু অসংঘ্ন উক্তি করায় ডোনার ও ডেমোক্রাটরা মনে করছিলেন
যে বয়সের ভারে তিনি কিছু কিছু জিনিস গুলিয়ে ফেলছেন। ওদিকে এ মাসের শুরুর দিকে ইয়োরোপে নেটো সামিটেও তিনি জেলেন্সকিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন হিসেবে
পরিচয় করিয়ে দেন, পরে অবশ্য তিনি তা সামলে নেন। এসব নিয়ে ডেমোক্রে ল মেকারেরা তাঁর পুননির্বাচন না কারার জন্যে চাপ প্রয়োগ করতে থাকেন। এমনকি ডোনারেরাও
টাকা দিতে অপারগতা জানাতে শুরু করেন। এমতাবস্থায় তিনি শেষ পর্যন্ত এক বিবৃতিতে নিচের সরে দাঁড়ানোর কথা বলেন এবং সাথে সাথে তাঁর রানিং মেট ভাইস প্রেসিডেন্ট
কামেলা হ্যারিসকে প্রার্থী হিসেবে ইনডোর্স করেন। ধারণা করা হচ্ছে, হ্যারিসই হবেন ডেমোক্রেটিক ক্যান্ডিডেট।
কোটা আন্দোলন ও অতঃপর
বেলাল বেগ
গত কয়েকদিনে কয়েক হাজার ছাত্র-জনতার যুদ্ধংদেহী আন্দোলন
কোটা, বাংলাদেশের বোঁটা ছিঁড়ে ফেলে বঙ্গোপসাগরে ফেলে দেবার উপক্রম করেছিল ভাগ্যিস সরকারের টনক নড়েছে; বহুযুগ পরে দেশে মিলিটারী নেমেছে, কারফিউ এসেছে। পাকিস্তানী ভাষায় বলছি, ''হালাত মামুল পে হ্যায়" অর্থাৎ সব কিছু স্বাভাবিক হচ্ছে। এটি ২৭ কোটি মানুষের জন্য পরম স্বস্তির ব্যাপার।
আমার মাথায় ঘুরছে অন্য বিষয়। সরকার কেঁচো খুড়তে গিয়ে সাপ বের করে ফেলেছে। বিএনপি আওয়ামিলীগের শীর্ষ নেতা-কর্মীদের হত্যা করে দলটিকে নিশ্ছিহ্ন করতে চেয়েছিল; জামাতে ইসলাম পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে মানুষ হত্যা করেছে নারীদের ধর্ষণ করেছে। আমার প্রশ্ন হচ্ছে এই পরীক্ষিত শত্রুদের আমরা স্বদেশে থাকতে দিচ্ছি কেন হোক না তারা দেশের নাগরিক। একটা যুক্তি এও হতে পারে তারাও ত মুসলমান। এই দুই পরিচয় নিয়ে তারা স্বাভাবিক বাঙালীই হত, তারাত আমাদের আত্মীয় হয়েই থাকত কিন্তু হয়েছে জিঘাংসু শত্রু।
শ্ত্রুরা একই গোত্রের মানুষ হলে দেন-দরবার আসা-যাওয়ার মাঝে একসময় শ্ত্রতা শেষ হয়ে যায় কিন্তু বিএনপি জামাত ত আওয়ামি লীগকে বাগে পেলেই খুনের চেষ্টা করে চলেছে কিন্তু রহস্যজনক কারণে তাদের শ্ত্রুদের সহ্য করে চলেছে আওয়ামি নেতা শেখ হাসিনাকে ১৫ বার হত্যা করার চেষ্টা করা সত্বেও।
কোটার ক্যামুফ্লাজে এবার শত্রুরা সরকার উৎখাত করার চেষ্টায় বুঝিয়ে দিয়েছে তারা দেশাভ্যন্তরে থেকে গেলে বাংলাদেশের মানুষেরা আর কখনো শান্তিতে ঘুমাতে পারবেনা। সরকারের এখন কি করা উচিৎ?
ছয় ছয়টি সজীব দেহ লাশ হওয়া কোনো অবস্থাতেই মেনে নেয়া যায় না
নাজনীন সীমন, ঢাকা থেকে
ছাত্র সমাজের এই ঢলে শাপলা চত্বরের মতো টমেটো সস মাখানো কতো জন আছে, সেটা বিবেচ্য। প্রশ্ন রাখতেই হয় যে বিষয়টি আদালতে নিষ্পত্তির অপেক্ষায় আছে এবং নির্ধারিত তারিখও আছে তার, সে বিষয়ে এখনই কেনো রাস্তায় নামা? বিবেচনায় আনা দরকার, ক্ষোভ থাকলেই নিজকে রাজাকার ডাকা যায় কিনা এবং গর্বের সাথে নিজকে রাজাকার বলে ঘোষণা দেয়া ছাত্রছাত্রীদের আদর্শের জায়গাটা কোথায় এবং এর মূলে কারা? আন্দোলনে নামলে লাঠিসোটা, অস্ত্র নিয়ে নামতে হবে কেনো, ভাংচুর, জনজীবন বিপর্যস্ত হবে কেনো? প্রচলিত রাজনৈতিক দলগুলোর আন্দোলন থেকে তাহলে এর তফাৎ কোথায়? সাধারণ শিক্ষার্থীরা কেনো অশোভন, হিংস্র ও ধ্বংসাত্নক হয়ে উঠবে? এটা যদি সাধারণের দাবী হয়ে থাকে, তবে প্রাজ্ঞজনেরা কেনো শুধু নির্দিষ্ট কোনো দল এবং পুলিশের আচরণ তুলে ধরছে অপর পক্ষের দিকটা দেখানো ছাড়া?
আর কোটা পদ্ধতির কথা বলা হলে মানতেই হবে বেশীর ভাগ মানুষ জানেই না কিভাবে এটা কাজ করে। কোটা প্রথা থেকেও যে ভর্তি ও চাকুরী ক্ষেত্রে ঘুষ আরো বড়ো বৈষম্য তৈরী করে, ভেবেছি কি আমরা? প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানী ভাতা চালু থাকুক, তাঁদের দুস্থ পরিবারদেরও সাহায্য করা হোক। কিন্তু তার আগে দরকার প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের একটি সঠিক তালিকা করা যা বিস্ময়কর হলেও সত্য যে এখনও করা সম্ভব হয়নি। ভর্তি ও সরকারী চাকুরীর জন্য কোনো আসল মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের বয়স এখন আর থাকার কথা নয় এবং এর পরের প্রজন্মের জন্য এই সুবিধা এখন আর প্রযোজ্য না থাকাই শ্রেয় ঠিক যেমন বন্ধ করা দরকার নারী ও জেলা কোটা।
সুষ্ঠু সমাধান আসুক অচিরেই, মানুষ ভাবতে শিখুক, আর কোনো প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতি না হোক। (১৬ জুলাই, ২০২৪)
এই দেশ মুক্তিযোদ্ধাদের
ইমরান রবীন, ইটালি মায়ের সাথে ফোনে কথা হলো। আমার মা রাজনৈতিক ভাবে খুব সচেতন তা বলা যায় না কিন্তু মা ছাত্র আন্দোলনের উচ্ছৃং্খলতা একদম মেনে নিতে পারেননি। বললেন ঢাকা পুরো শান্ত, প্রতিদিন পত্রিকা পড়ছেন, টিভি দেখছেন, কারফিউ উইথড্র হলে বাজারে যাচ্ছেন তার যাপিত জীবনে এ যেন এক অপ্রত্যাশিত অবসর! মা নিজে মুক্তিযোদ্ধার সংগঠকের মেয়ে, ৭১ সালে আগরতলা ও কোলকাতায় রিফুউজি হতে বাধ্য হয়েছিলেন। প্রিয় আপা, আমাদের আরেক মা শেখ হাসিনা তখনও প্রধানমন্ত্রী হননি। ১৯৯৩ সালে চাঁদপুরে আসেন নানা বাড়ি। আমরা পুরো পরিবার বাসার ৩ তলা ছাদ হতে ফুলেল বৃষ্টি করে বরণ করলাম। আমাকে অটোগ্রাফ দিলেন। তোফায়েল আহমেদ, আমির হোসেন আমু, আব্দুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগের পঞ্চ পাণ্ডব এই প্রথম কাছ হতে দেখা। প্রধানমন্ত্রী এসেছিলেন তার সোনা চাচার বাসায়। বংগবন্ধু নানাকে সোনা ভাই ডাকতেন। চাঁদপুর কালিবাড়ি সংলগ্ন ৫০/৫০ কুমিল্লা রোডস্থ বাড়ি ৭১ স্মৃতি বিজড়িত। এখানেই ৭১ সংগ্রাম কমিটি তৈরি হয়। চাঁদপুরে মুক্তিযোদ্ধা এবং জেলার আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক খড়ি এখানেই। এ বাসাকে ঘিরেই আমাদের রাজনৈতিক উন্মেষ। আজকে এ কথাগুলো বলার উদ্দেশ্য আমরা মুক্তিযুদ্ধের পরিবারের লোক হলেও নানা কখনও মুক্তিযুদ্ধের তালিকায় নাম লিখাননি।হয়তো তার সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক অবস্থানের কারণে তালিকায় নাম ওঠানো সংগতিপূর্ণ মনে করেননি। আমরাও এ নাম ভেংগে খাইনি। অনেকেই মুক্তিযুদ্ধের তালিকায় নাম লেখাননি। সংখ্যাটাও কম নয়। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের তালিকায় নাম না লিখিয়েও আওয়ামী লীগের রাজনীতি করা যায়। অসাম্প্রদায়িক, বাংগালি জাতীয়তাবাদের রাজনীতি করা যায়। কিন্তু সব মুক্তিযোদ্ধাদের এক সামাজিক অর্থনৈতিক অবস্থান ছিল না। তাই তাদের রাষ্ট্রীয় সুযোগসুবিধা থাকুক এটা কি জাতির কাছে খুব বেশি চাওয়া ছিল? এই যে ভূখন্ড পেয়েছেন, বাংলা ভাষায় কথা বলেন, বাংলা সংস্কৃতি চর্চা করেন, বাংলা সবুজ পাসপোর্ট ব্যবহার করেন সবইতো এই মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য। যারা,আজকে বাংগালি জাতীয়তাবাদের উপর আঘাত হেনেছে, মুক্তিযোদ্ধাদের কটুক্তি করেন তাদের উপর লাখো শহীদের অভিসম্পাত ইহ ও পর জীবনে থাকবেই। এ অভিশাপ যেন শেষ হওয়ার নয়। বাংলা ভাষা ভাষী, মননের ঋদ্ধতায় যারা বাংগালি তাদের প্রত্যেক মা কে আমার সালাম ও আদাব।
আকাশ ভরা তারা
অমি রহমান পিয়াল: গত কিছুদিন সুশীলদের বহু বয়ান শুনলাম। তার মধ্যে সবচেয়ে নিরাপদ এবং হিট ডায়লগ ছিলো- সরকার শুরুতেই সমঝোতায় আসলো না কেনো? তাইলে তো এসব কিছুই হইতো না! এবং আমরা আবেদ আলীদের নিয়া ব্যস্ত থাকতে পারতাম। সরকার কতোটা দূর্নীতিবাজ সেগুলা নিয়া ফেসবুকে বাল্ফালাইতে পারতাম। আগেই বলছি গোবর মাটির জন্য সার হইলেও মগজে ঢুকলে বিপজ্জনক।
ঘটনার ধারাবাহিকতা কি? ২০১৮ সালে প্রথম কোটাবিরোধী আন্দোলনের জবাবে সরকার কোটাই বাতিল করে দিলেন। পরিপত্র জারি করলেন। এভাবে ৫ বছর চললো। ওইটা নিয়া কোনো আন্দোলন হইলো না। শুধু মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের কিছু সদস্য একটু হাউকাউ করলেন। তাগো পাশে কেউ থাকলো না। টুশব্দও করলো না। জেন্ডার ইকুইলিটির দাবীতে অটল নারীরা কোটা ছাড়া নিজের মেধার প্রমাণ দিতে পারলো না। চাকরীও পাইলো না। কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান আদালতে গেলেন, রিট করলেন। হাইকোর্ট সরকারের আদেশ স্থগিত করলো।
এইটার বিরুদ্ধে ছাত্ররা আবার প্রতিবাদ করলো। আদালত বললো একমাস পর তারা এই বিষয়ে বিস্তারিত সিদ্ধান্ত জানাবেন। সরকার তখন কি করতে পারতো? বিচারপতিগো বলতেন- না, এখনই সিদ্ধান্ত দেন? আপনারা তো ফেসবুকে সরকার চালান। সব কিছু ইনস্ট্যান্ট কফির মতো সুইচ টিপলেই হয়ে যায়! সরকার সংবাদ মাধ্যমে বার্তা দিলো একমাস অপেক্ষার তারপর দেখা যাবে। কিন্তু ততক্ষণে ঠান্ডা পানির বোতল আর বিকাশ নিয়া একদল ঢুকে পড়ছে শাহবাগে। ছাত্রদের ঠান্ডা মাথায় ভাবতেও দিলো না।
এই পরজীবি রাজনৈতিক দলগুলা (পড়েন বিএনপি জামাত এবং ঝান্ডু বামরা) নিজের শক্তিতে কখনও কিছু করতে পারে নাই। ওই হ্যাডম থাকলে পিনাকীর চাপা সত্যি কইরা গত ডিসেম্বরেই সরকার পইড়া যাইতো। কিন্তু সাধারণ মানুষের মধ্যে তাগো জন্য কোনো পীরিত নাই। সেটা জাগাইতেই তাদের দরকার হয় সাধারণ ছাত্রদের। যেটা গত নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের সময়ও দেখা গেছিলো। স্কুল ড্রেস পরে তারা ছাত্রদের মাঝে মিশে গেছিলো। আর গুজব, ওরে গুজব! এই গোবরজীবি সুশীলরাই সেগুলা বেশী ছড়াইতো।
এবারও তাই হইলো। ছাত্রদল শিবির শুরু করলো হল এটাক আর পুলিশের উপর আক্রমণ। মারপিট করছেন কখনও? মাথায় একটা লাঠির বাড়িই আপনার ভবলীলা সাঙ্গ করতে যথেষ্ট। কেনো ভাবলেন পুলিশ পইড়া মার খাবে? তারা মানুষ না? তাগো পরিবার নাই? আপনি কাউরে আক্রমণ করা মানেই আপনার আক্রান্ত হওয়ার সমান সুযোগ আছে। যে ছাত্রীর মুখে রক্তমাখা ছবি আপনাদের বুক ভেঙে দিছিলো সেই ছবিতে তার হাতে সাদা রঙের রডটা কেনো আপনাদের চোখে পড়ে নাই? সে তো আপনাদের মতো অন্ধ ছিলো না। ওটার সুচালো আগা কারো বুকে বিধলে বাঁচতো?
প্রধানমন্ত্রী বললেন মুক্তিযোদ্ধার নাতীরা কোটা পাবে না তো কি রাজাকারের নাতীরা পাবে? অন্যায় বলছেন? অমনি শিবির শ্লোগান তুললো তুমি কে আমি কে, রাজা*কার রাজা*কার। স্বাধীনতার ৫৩ বছরের মাথায় যুদ্ধাপরাধীদের প্রেতাত্মারা অট্টহাসি হাসলো। কারণ আপনারা এইটারে লেজিটেমিসি দিলেন। হালাল করলেন। তারমানে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের দালালী সঠিক ছিলো, মুক্তিকামী আর বুদ্ধিজীবিদের হত্যা সঠিক ছিলো? মেয়েদের তুলে নিয়ে পাকিস্তান আর্মি ক্যাম্পে সাপ্লাই দেওয়া সঠিক ছিলো? রেইপ? গণহত্যা?
একাত্তরের ঘাতক সেই ইসলামী ছাত্রসংঘের পরিবর্তিত রূপ ছাত্রশিবিরের ক্যাডাররে আপনারা ভাই ডাইকা প্রোপিক বানাইলেন! একবারও ভাবলেন না রাবার বুলেটে মানুষ মরে! গুগল সার্চ দেন! তাইলে তারে মারলো কারা? কে তার লাশরে ক্যাশ করলো? ছাত্রলীগ ছেলেদের ছয়তলা থেকে ফেলে কোপাইলো। তখন আপনারা হাততালি দিয়ে আলহামদুলিল্লাহ বললেন। গনিমতের মাল হওয়া কারও স্টকহোম সিনড্রম থাকতে পারে, সেটা জেনেটিকালি তার উত্তরসূরীরাও পাইতে পারে- আপনারাই তো প্রমাণ করে দিলেন!
রাষ্ট্রের সম্পত্তি ধ্বংস কি ছাত্ররা করছে? বিটিভি কি ছাত্ররা পোড়াইছে? টোলপ্লাজায় আগুন কি ওরা দিছে? মেট্রোরেল ছয়মাসের জন্য বিকল কি ওরা করছে? কারাগার ভাইঙ্গা অস্ত্র লুট, জঙ্গীদের মুক্ত কি ওরা করছে? না, তারা করে নাই। কারা করছে? উত্তর যদি জানেন তাইলে এখনও কেনো আপনারা অন্ধ? এখনও কেনো প্রলাপ দিতেছেন সব দোষ সরকারের? এই সরকারের বদলে বিম্পি জামাত আসলে খুব সুখে থাকবেন? দূর্নীতি থাকবে না? যারা শাহবাগে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে নামছিলো তারা নিরাপদ থাকবে?
টিশার্ট জিন্স পইরা বিড়ি ফোকার স্বাধীনতা পাইবেন? হিজাব ছাড়া বাইর হইতে পারবেন? ফেসবুকে সমালোচনার পর পিঠের ছাল থাকবে? প্রথমআলোর কিছু দালালপ্রডাক্টের উস্কানীতে ভুইলেন না, তাগো মার্কিন রেসিডেন্সি আছে (টাইমলাইন সার্চ দেন। দেখেন তাগো গতিবিধি, আপনার ইন্টারনেট নাই তাগো আছে!)। উস্কানী দিয়া, আপনাদের বুক খালি কইরা, আপনাগো পেছন উদলা করে তারা হাসতে হাসতে আম্রিকা চলে যাবে। কতো ডলার কামাইলো গুনবে! আর আপনারা ইশপের গল্পের গা*ধাটার মতো ভাববেন আগের মালিকই ভালো ছিলো!
ঠান্ডা মাথায় ভাবেন। আপনার মাইন্ড যদি পিনাকী, খলিল, তুলকারনাইন, আনিসুল হক, সিমু নাসেররা কিংবা জামাত শিবির কন্ট্রোল করে তাইলে আকাশ ভরা তারাই আপনার ভবিতব্য।
তোমরা যারা শিবির কর!
মুহাম্মদ জাফর ইকবাল
বেশ কিছুদিন আগের কথা। আমি আমার অফিসে যাচ্ছি, তখন বারান্দায় আমার দুজন ছাত্রের সঙ্গে দেখা হলো, তারা আমাকে কিছু বলল না কিন্তু তাদের দেখে আমার মনে হলো, তারা আমার সঙ্গে কথা বলতে চায়। আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘তোমরা কি আমার সঙ্গে কথা বলতে চাও?’ তারা মাথা নাড়ল, একজন কুণ্ঠিতভাবে আমার হাতে দুটি বই তুলে দিয়ে বলল, ‘স্যার, আপনাকে এই বই দুটি দিতে এসেছি।’ আমি বই দুটি নিলাম। বিজ্ঞানের ওপর চমৎকার দুটি বই, হাতে নিয়ে বললাম, ‘থ্যাংকু। সুন্দর পাবলিকেশন্স।’ তারপর বই দুটি খুললাম, ভেতরে লেখা ইসলামী ছাত্রশিবির।
মুহূর্তে আমার সারা শরীর শক্ত হয়ে গেল। ১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আজ্ঞাবহ হয়ে এই দেশে যে ভয়ংকর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, সে জন্য আমি তাদের কখনো ক্ষমা করিনি। আমি জেনেশুনে কখনো কোনো জামায়াতে ইসলামীর নেতার সঙ্গে হাত মেলাইনি। আমার যে আপনজনেরা মুক্তিযুদ্ধে মারা গিয়েছে, তাদের সম্মান দেখানোর জন্য এটি আমার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। আমেরিকান এম্বাসির এক অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত হয়ে যখন আবিষ্কার করেছি, সেখানে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদেরও ডাকা হয়েছে, আমি সেখান থেকে উঠে চলে এসেছিলাম। আমি আমার এই বিশ্বাসের কথা কখনো গোপন রাখিনি। কাজেই এই দুজন ছাত্র সেটা জানে না, তা হতে পারে না।
আমি ছাত্রদের বই দুটি ফেরত দিয়ে অত্যন্ত কঠিন গলায় বললাম, ‘জামায়াতে ইসলামীকে আমি কোন চোখে দেখি, তোমরা জানো না? তোমরা সেই দলের মানুষ হয়ে তোমাদের সংগঠনের বই আমাকে উপহার দিতে এসেছ? তোমরা আমাকে চেনো না?’
ছাত্র দুটির চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেল। আমি মুক্তিযুদ্ধের সময় বদর বাহিনীর প্রধান হয়ে নিজামী আর মুজাহিদ কী করেছে, তাদের মনে করিয়ে দিলাম। গোলাম আযম যুদ্ধের সময় কী করেছে এবং বাংলাদেশের জন্মের পরও কীভাবে তারা বিরোধিতা করেছে, সেই কথা বললাম। আমার মতো শিক্ষকেরা জামায়াতে ইসলামীর ছাত্রসংগঠনের সদস্যদের তৈরি বদর বাহিনীর হাতে কীভাবে মারা গিয়েছে, সেই ঘটনাগুলো বলে তাদের কাছে জানতে চাইলাম, কম বয়সী তরুণ হওয়ার পরও তারা কেমন করে যুদ্ধাপরাধীদের একটা সংগঠনের সদস্য হতে পারল?
একজন ছাত্র দুর্বল গলায় বলল, ‘স্যার, আমরা তো জামায়াতে ইসলামী করি না। আমরা ছাত্রশিবির করি।’
অনেক দিন আগের কথা, জামায়াতে ইসলামী আর ছাত্রশিবিরের মধ্যে পার্থক্যটুকু নিয়ে আমি তাদের কী বলেছিলাম, আমার এখন মনে নেই। শুধু মনে আছে, ছাত্র দুটি মাথা নিচু করে আমার কাছ থেকে ফিরে গিয়েছিল।
নানা কারণে এই ঘটনার কথা আমি ভুলতে পারি না। আমি ছোট ছেলেমেয়েদের জন্য লেখালেখি করি। আমি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি, আমাদের দেশের ছেলেমেয়েরা একটি নতুন বাংলাদেশের সন্তান এবং তারা বড় হয়ে আমাদের দেশটাকে পাল্টে দেবে। আমি যখন সেই কথাটা তাদের বলি, আমার ধারণা, তারা আমার কথা বিশ্বাস করে। তাই তাদের অনেকেই আমার কাছে উৎসাহের কথা, অনুপ্রেরণা কিংবা স্বপ্নের কথা শুনতে আসে। শিবিরের এই দুটি ছেলে নিশ্চয়ই ভেবেছিল, তাদের এই চমৎকার বই দুটি আমাকে মুগ্ধ করবে, আমি উৎসাহসূচক কিছু বলব। অন্য দশজন তরুণের মতো তারাও এক ধরনের দাবি নিয়ে আমার কাছে এসেছিল, কিন্তু আমি তাদের আশা পূরণ করতে পারিনি। আমার ভয়ংকর রকমের তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখে তারা নিশ্চয়ই হতবুদ্ধি হয়ে গিয়েছিল—কিন্তু আমার কিছু করার ছিল না।
আমি তাদের কথাগুলোও ভুলতে পারি না। তারা আমাকে বলেছিল যে তারা জামায়াতে ইসলামী করে না, তারা শিবির করে। তাহলে তারা কি সত্যিই বিশ্বাস করে যে তারা জামায়াতে ইসলামী থেকে ভিন্ন? ১৯৭১ সালে এই দেশে জামায়াতে ইসলামী যে পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড করেছে, যে অমানুষিক নির্যাতন করেছে, যে ভয়ংকর হত্যাকাণ্ড করেছে, সেগুলো তাদের কোনোভাবে স্পর্শ করে না?
এই দুজন ছাত্র ছাড়া আর কখনোই কোনো জামায়াত বা শিবিরকর্মী আমার কাছে কথা বলতে আসেনি, তাই আমি কোনো দিন হয়তো এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে পাব না।
২.
কেউ যদি আমাকে জিজ্ঞেস করে, এই দীর্ঘ জীবনে আমি সবচেয়ে বিচিত্র, সবচেয়ে অবিশ্বাস্য বিষয় কী দেখেছি। আমি এতটুকু দ্বিধা না করে বলব, সেটি হচ্ছে ইসলামী ছাত্রশিবির। তার কারণ, যে বয়সটি হচ্ছে মাতৃভূমিকে ভালোবাসার বয়স, সেই বয়সে তারা ভালোবাসে দেশদ্রোহী বিশ্বাসঘাতকদের, যারা এই মাতৃভূমির বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছে। যে বয়সে একজন তরুণের মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বে অনুপ্রাণিত হওয়ার কথা, সেই বয়সে তারা অনুপ্রাণিত হয় সেই মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যাকারীদের দিয়ে। যে বয়সে তাদের স্বপ্ন দেখার কথা দেশের বড় বড় লেখক, শিল্পী, ডাক্তার, বিজ্ঞানী, সাংবাদিককে নিয়ে, সেই বয়সে তারা আনুগত্য মেনে নিয়েছে সেই সব মানুষের, যারা আলবদর বাহিনী তৈরি করে একাত্তরে এই দেশের লেখক, শিল্পী, ডাক্তার, বিজ্ঞানী আর সাংবাদিকদের হত্যা করেছে! যে বয়সে তাদের একুশে ফেব্রুয়ারিতে প্রভাতফেরি করার কথা, ষোলোই ডিসেম্বরে স্মৃতিসৌধে ফুল দেওয়ার কথা, পয়লা বৈশাখে রাজপথে রবীন্দ্রসংগীত গাওয়ার কথা, সেই বয়সে তারা যে শুধু এই অবিশ্বাস্য আনন্দ থেকে নিজেদের বঞ্চিত করে রাখে তা নয়, তারা এগুলোকে প্রতিহত করার চেষ্টা করে। যে বয়সে তাদের মুক্তচিন্তা শেখার কথা, গান গাওয়ার কথা, নাটক করার কথা, আদর্শ নিয়ে ভাবালুতায় ডুবে যাওয়ার কথা, সেই সময় তারা ক্ষুদ্র গণ্ডির মধ্যে নিজেদের আটকে রাখতে শেখে, সাম্প্রদায়িক হতে শেখে, ধর্মান্ধ হতে শেখে। যে বয়সে ছেলে আর মেয়ের ভেতর সহজ ভালো লাগা ভালোবাসা জন্ম নেওয়ার কথা, সেই বয়সে তারা সেই অনুভূতিগুলোকে অশ্রদ্ধা করতে শেখে—সে জন্য তারা কত দূর যেতে পারে, সেটা আমি নিজের চোখে দেখেছি, সেই ভয়ংকর কাহিনি আমি কখনো কাউকে বলতেও পারব না!
যখন এই বাংলাদেশের সব মানুষ দেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য অপেক্ষা করছে, তখন ইসলামী ছাত্রশিবির নামে এই সংগঠনের হতভাগ্য তরুণদের পথে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে পুলিশের সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য। খবরের কাগজ খুললেই দেখতে পাই, এখনো দেশের আনাচকানাচ থেকে তাদের ধরে জেলে ঢোকানো হচ্ছে। আমার খুব জানার ইচ্ছে করে যে নেতারা তাদের বুঝিয়েছে, রাস্তায় নেমে চোরাগোপ্তা হামলা করে পুলিশের গাড়ি পোড়াতে হবে, নিজের ভবিষ্যৎকে বিপন্ন করতে হবে। সেই সব নেতা কি তাদের সন্তানদেরও পথে নামিয়েছে? আমি মোটামুটি নিশ্চিত, সেটি ঘটেনি। আমি আগেও দেখেছি, এই নেতারা যখন তাদের কর্মী বাহিনীকে অনিশ্চিত জীবনের দিকে ঠেলে দেয়, তখন তাদের সন্তানেরা ইংরেজি মিডিয়াম প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে নিজেদের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলে।
আমি অনেক চিন্তা করেছি, কিন্তু কিছুতেই বুঝতে পারিনি, কেমন করে বাংলাদেশের মতো রক্তস্নাত একটি দেশে, যেখানে মুক্তিযোদ্ধারা নৃশংস পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সঙ্গে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে, সেখানে একজন মানুষ মুক্তিযুদ্ধ কিংবা মুক্তিযোদ্ধাদের ভালো না বেসে তাদের হত্যাকারীদের ভালোবাসতে পারে! আমার মনে আছে, আমি বহুকাল পরে যখন প্রথম এই দেশে ফিরে এসেছিলাম, তখন ইসলামী ছাত্রশিবিরের একটা মিছিল দেখে একধরনের অবিশ্বাসের দৃষ্টিতে তাদের দিকে তাকিয়ে ছিলাম। তখন লক্ষ করেছিলাম, একজন ছাত্র তার হাতের ফাইল দিয়ে নিজের মুখটি ঢেকে রেখেছে, যেন আমি তার মুখটা দেখতে না পারি। আমার সামনে এই পরিচয় দিতে তার লজ্জা কিন্তু এই মিছিল থেকে তার বের হয়ে যাওয়ার ক্ষমতা নেই—এর চেয়ে দুঃখের ব্যাপার আর কী হতে পারে?
একজন ছাত্র কেমন করে শিবির করে, তার একটি উত্তর অবশ্য আমি একবার খুঁজে পেয়েছিলাম। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ছাত্র একবার আমাকে একটি এসএমএস করে জানিয়েছিল যে সে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, খুব ভালো ছাত্র এবং তার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার খুব ইচ্ছে। তার বিভাগীয় প্রধান জামায়াতে ইসলামীর লোক এবং তাকে পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে সে যদি শিবির না করে, তাহলে তাকে শিক্ষক হতে দেওয়া হবে না। সে জন্য সে শিবিরে যোগ দিয়েছে এবং এটি নিয়ে তার কোনো অহংকার নেই। সেই এসএমএসটিতে আমি একজন মেরুদণ্ডহীন অসহায় হতভাগা মানুষকে আবিষ্কার করেছিলাম। তার জন্য কোনো মমতা নয়, আমি করুণা অনুভব করেছিলাম। আমি ইচ্ছে করলেই সেই ছাত্রটিকে খুঁজে বের করতে পারতাম, তার নীতিহীন বিভাগীয় প্রধানের পরিচয় জানতে পারতাম কিন্তু আমি তার কিছুই করিনি—আমার রুচি হয়নি।
আমার মাঝেমধ্যে জানার ইচ্ছে করে, এ ধরনের কারণে কতজন তরুণ শিবিরে যোগ দিয়েছে—কোনো স্বপ্ন নয়, কোনো আদর্শ নয়, শুধু স্বার্থ, শুধু চাওয়া-পাওয়া। মাঝেমধ্যেই পত্রপত্রিকায় দেখতে পাই, জামায়াতে ইসলামীর নাকি অনেক অর্থবিত্ত, তাদের অনেক ধরনের ব্যবসা। এই দলে যোগ দিলে নাকি তাদের প্রতিষ্ঠানে চাকরি পাওয়া যায়। বিশ্ববিদ্যালয়ে তারা হল দখল করে রাখে, তাদের দল করলে সেই হলে সিট পাওয়া যায়। তারা কলেজ দখল করে রাখে, তাদের দল করলে সেই কলেজে ভর্তি হওয়া যায়। পত্রপত্রিকায় দেখি, পরিচিতদের কাছে শুনি, তাদের দল নাকি অত্যন্ত সংগঠিত। আদর্শ ছাড়া কিংবা ভুল আদর্শের সংগঠন কি খুব বেশি দিন টিকে থাকতে পারে? দীর্ঘদিন মিলিটারির শাসনে থাকার কারণে মানুষ যখন বিভ্রান্ত ছিল, তখন এই দেশে জামায়াতে ইসলামীরা ইলেকশনে ৩০টার মতো সিট পেয়েছিল। (কী লজ্জা!) যখন দেশের মানুষ গণতন্ত্রের ছোঁয়া পেতে শুরু করেছে, একটু বুঝতে শুরু করেছে তখন তাদের সিটের সংখ্যা এক-দুইয়ে নেমে এসেছিল। উপায় না দেখে তখন তারা বিএনপির ঘাড়ে চড়ে বসেছে, আবার তারা গোটা ত্রিশেক সিট পেয়েছে, মন্ত্রী পর্যন্ত হয়েছে। দেশের মানুষ যখন আবার সজাগ হয়েছে, তখন সিটের সংখ্যা আবার এক-দুইয়ে নেমে এসেছে। এখন তারা কার ঘাড়ে উঠবে। এই দেশে যদি নির্বাচন করেই শুধু ক্ষমতায় যাওয়া যায়, তাহলে তাদের জন্য কোন পথটুকু খোলা আছে। আমার খুব আশা ছিল, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে দেশের মানুষের এত আগ্রহ, এত উত্তেজনা দেখে বিএনপি হয়তো যুদ্ধাপরাধীদের এই দলটিকে পরিত্যাগ করবে—তারা করেনি। আমি খুব আশাহত হয়েছি কিন্তু তাদের ছাত্রসংগঠন আমাকে আশাহত করেনি। তারা শিবিরের সঙ্গে হাত মেলাতে রাজি হয়নি।
আমি রাজনীতি ভালো বুঝি না, আমার রাজনৈতিক বিশ্লেষণ কারও গুরুত্ব দিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু আমি একটা বিষয় খুব ভালো করে জানি, এই দেশে মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করে আর কেউ কোনো দিন রাজনীতি করতে পারবে না। পঁচাত্তর থেকে নব্বইয়ের সেই কালো সময় আমরা পার হয়ে এসেছি, আর কেউ কখনো এই দেশের মানুষকে সেই অন্ধকার জগতে ঠেলে পাঠাতে পারবে না। কাজেই যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করে কেউ সুবিধে করতে পারবে না, বরং যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তাদের বিচার করে এই গ্লানিময় অধ্যায়কে চিরদিনের মতো সমাপ্ত করে দিতে হবে।
৩.
আমার এই লেখাটি তোমরা যারা শিবির করো, তাদের জন্য। আমি জানি, এটি সম্পূর্ণ অর্থহীন একটি কাজ—আমার এই লেখাটি তোমাদের মধ্যে বিন্দুমাত্র প্রভাব ফেলবে না এবং তোমরা যারা পড়ছ তারা আমার এই লেখায় বিভিন্ন অংশের বিরুদ্ধে এর মধ্যে নানা ধরনের যুক্তি দাঁড় করিয়েছ। শুধু তা-ই নয়, তোমাদের প্রিয় জায়গা—ইন্টারনেটে সম্ভবত এই লেখার বিরুদ্ধে বিশাল একটা প্রচারণা শুরু হবে। কিন্তু তবু আমার মনে হয়েছে, আমার এই কাজটুকু করা উচিত, তোমাদের কখনো যে সত্য কথাগুলো বলা হয়নি, আমার সেটা বলা উচিত।
তোমাদের কাছে আমার প্রথম যে প্রশ্ন সেটি হচ্ছে, তোমরা কি জানো আবুল আলা মওদুদী নামে যে মানুষটির চিন্তাধারার ওপর নির্ভর করে জামায়াতে ইসলামী নামে রাজনৈতিক দলটি গড়ে উঠেছে, সেই মানুষটিকে মানুষ হত্যার প্ররোচনা দেওয়ার অপরাধে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল (যদিও সেটি শেষ পর্যন্ত কার্যকর করা হয়নি)। তোমরা কি জানো জামায়াতে ইসলামী ইসলাম প্রচারের দল নয়, এটি রাজনৈতিক দল এবং এটি সব সময় ভুল রাজনীতি করে এসেছে? এই উপমহাদেশে যখন ব্রিটিশদের বিদেয় করে পাকিস্তান সৃষ্টি করার আন্দোলন হয়েছে, তখন তারা সেই আন্দোলনের বিরোধিতা করেছে। আবার যখন এই দেশে পাকিস্তান নামের দানবকে পরাস্ত করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, তখন তারা বাংলাদেশের বিপক্ষে গিয়ে পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছে? এখন যখন মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধাপরাধ করে থাকা দেশদ্রোহীদের বিচার করা হচ্ছে, তখন আবার জামায়াতে ইসলামী সেই সত্যকে অস্বীকার করে যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষ নিয়েছে—সেটি ঘটেছে তোমাদের চোখের সামনে এবং তোমরা খুব ভালো করে জানো, সেখানে তোমাদের হূদয়হীনভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
আমার ধারণা, তোমরা যারা শিবির করো, তারা সম্ভবত কখনোই খোলা মন নিয়ে এই দেশের ইতিহাস সম্পর্কে বাইরের কারও সঙ্গে কথা বলো না। তোমরা সব সময়ই নিজেদের সঙ্গে নিজেরা কথা বলো, একে অন্যকে উৎসাহ দাও, একে অন্যের ওপর নির্ভর করো কিন্তু তোমাদের দলের বাইরের মানুষেরা তোমাদের সম্পর্কে কী ভাবে, কখনোই তার খোঁজ নাওনি। যদি খোঁজ নিতে, তাহলে হয়তো তোমরা সম্পূর্ণ ভিন্ন একটা ছবি দেখতে পেতে। তোমরা সবিস্ময়ে আবিষ্কার করতে, তোমাদের যেভাবে যা কিছু শেখানো হয়েছে, তার সবকিছু সত্যি নয়। তোমরা নিশ্চয়ই লক্ষ করেছ, এই দেশের অজস্র সংবাদপত্র, টেলিভিশন চ্যানেলের মধ্যে তোমাদের দলের দু-একটি পত্রিকা বা টেলিভিশন চ্যানেল ছাড়া অন্য কোথাও তোমাদের সম্পর্কে একটিও ভালো কথা ছাপা হয় না। কিছুদিন থেকে গাড়ি ভাঙচুর বা পুলিশকে আক্রমণ করার যে নতুন কর্মকাণ্ড শুরু করেছ, সেটি করে তোমরা যে নিজেরাই বিপদগ্রস্ত হতে শুরু করেছ, সেটা কি লক্ষ করেছ? আজ রাতেই আমি খবরে জানতে পারলাম, সাধারণ মানুষ তোমাদের ধাওয়া করছে, তোমাদের আক্রমণ করছে। আমি মোটামুটি নিশ্চিত, এটি ধীরে ধীরে আরও বাড়তে থাকবে। তোমরা নিজেদের জন্য যে জীবন বেছে নিয়েছ, তার মধ্যে কি বিন্দুমাত্র মর্যাদা আছে? আত্মতুষ্টি আছে?
আজ থেকে কয়েক যুগ আগেও এই পৃথিবী যে রকম ছিল, এখন সেই পৃথিবী নেই। এই পৃথিবী অনেক পাল্টে গেছে। নতুন পৃথিবী তালেবান বা লস্কর-ই-তাইয়েবার পৃথিবী নয়। জামায়াতে ইসলামী বা শিবসেনার পৃথিবীও নয়। নতুন পৃথিবী হচ্ছে মুক্তচিন্তার পুরোপুরি অসাম্প্রদায়িক একটা পৃথিবী। এই নতুন পৃথিবীর মানুষেরা অসাধারণ, তারা একে অন্যের ধর্মকে সম্মান করতে শিখেছে, একে অন্যের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যকে উপভোগ করতে শিখেছে, একে অন্যের চিন্তাকে মূল্য দিতে শিখেছে। এই নতুন পৃথিবীতে মানুষে মানুষে কোনো বিভাজন নেই। দেশ-জাতির সীমারেখা পর্যন্ত ধীরে ধীরে উঠে যাচ্ছে।
তাই এই নতুন পৃথিবীতে যখন কেউ ধর্ম দিয়ে মানুষকে বিভাজন করে রাজনীতি করতে চায়, পৃথিবীর মানুষ তখন তাকে পরিত্যাগ করে। জামায়াতে ইসলামীর মতো বা শিবসেনার মতো রাজনৈতিক দল তাই হচ্ছে বাতিল হয়ে যাওয়া রাজনৈতিক দল—নতুন পৃথিবীতে এই দলগুলোর কোনো ভবিষ্যৎ নেই।
আমি জানি, যদিও আমি এই লেখাটি লিখেছি যারা শিবির করে তাদের উদ্দেশে কিন্তু তারা আসলে আমার একটি কথাও বিশ্বাস করবে না। যদি বিশ্বাস করেও ফেলে, তার পরও তাদের কিছু করার থাকবে না। এ ধরনের রাজনৈতিক দল যখন তৈরি করা হয়, তখন অনেক লোভ দেখিয়ে দলে টানা হয়। কিন্তু দলে যোগ দিয়ে যদি মোহভঙ্গও হয়, তবু তারা আর দল থেকে বের হতে পারে না। অভিশপ্ত প্রেতাত্মার মতো এক অন্যকে আঁকড়ে ধরে টিকে থাকতে হয়।
যারা এখনো শিবিরে যোগ দেয়নি, তারা হয়তো এই লেখাটি পড়ে একটুখানি ভাববে। যখন তাকে এই দলে যোগ দেওয়ার কথা বলবে, হয়তো তারা একটিবার চিন্তা করবে, আমাদের এই ভালোবাসার দেশটিকে যারা টুঁটি চেপে হত্যা করতে চেয়েছিল, আমি কেন সেই দলে যোগ দেব? দেশকে যখন ভালোবাসার কথা, তখন কেন আমি দেশের সঙ্গে বেইমানি করব?
মাতৃভূমিকে ভালোবাসার তীব্র আনন্দ যারা উপভোগ করেনি, যারা ভবিষ্যতেও কোনো দিন অনুভব করতে পারবে না, আমি সেসব হতভাগ্য মানুষের জন্য গভীর করুণা অনুভব করি।
কথা ও ছবি [সময় টিভির সৌজন্যে]
সন্ত্রাসীরা চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙে দিতে চায়
ধর্মান্ধের মধ্যযুগ
হায়! হায়! একি কাণ্ড! এরা কি মানুষ!!
আইন শৃঙ্খলা বাহিনি না থাকলেই তো ওদের সুবিধা
ন্যাম আন্তর্জাতিক কবিতা পুরস্কার পেলেন কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ
এনওয়াইনিউজ৫২: ২২তম ন্যাম আন্তর্জাতিক কবিতা পুরস্কার পেলেন কবি ও শব্দগুচ্ছ সম্পাদক হাসানআল আব্দুল্লাহ। লেবাননে অবস্থিত ন্যাম ফাউন্ডেশনের হেডকোয়ার্টার থেকে সোমবার এই পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। মোট চারটি শাখায় বিশ্বের নানাদেশের কবিদের এই পুরস্কার দেয়া হয়। হাসানআল আব্দুল্লাহ পুরস্কারটি পেয়েছেন ক্রিয়েটিভিটি ক্যাটাগোরিতে। এর আগে এবছর জানুয়ারি মাসে হাসানআল আব্দুল্লাহকে এই পুরস্কারের জন্যে নমিনেশন দেন পোলিশ রাইটার্স ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট কবি কাজিমেয়ারেজ বুরনাত। পুরস্কার পাওয়ার পর কবি ন্যাম ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানান। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন কবি কাজিমেয়ারেজ বুরনাতের প্রতিও। উল্লেখ্য কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ ইতিপূর্বে আরো দুটি আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ২০১৬ সালে পেয়েছেন হোমার ইয়োরোপিয় কবিতা পুরস্কার ও ২০২১ সালে পেয়েছেন ক্লেমেন্স জেনেস্কি কবিতা পুরস্কার। তাছাড়া তিনি নিউইয়র্ক কালচারাল এফেয়ার্স থেকে পেয়েছেন অনুবাদ গ্রান্ট (২০১৯), নতুন ধারার স্বতন্ত্র সনেটের জন্যে লেবুভাই ফাউন্ডেশন পুরস্কার (২০১৩), পুশকার্ট নমিনেশন ও ২০০৭ সালে তিনি কুইন্স পোরো পোয়েট লরিয়েট ফাইনালিস্ট-এর গৌরব অর্জন করেন। সাহিত্যের নানা শাখায় কবি হাসানআল আব্দুল্লাহর প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা পঞ্চাশের অধিক। অনন্যা প্রকাশনি থেকে দুইখণ্ডে প্রকাশ পেয়েছে তাঁর ‘কবিতাসমগ্র’। দেশের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয় তাঁর বই ‘কবিতার ছন্দ’ (বাংলা একাডেমি)। তিনি সম্পাদনা করেছেন ‘বিশশতকের বাংলা কবিতা’ (মাওলা), ও ‘ওয়ার্ল্ড পোয়েট্রি অন্থোলজি’ (ডার্কলাইড পাবলিশিং)। অনুবাদ করেছেন ‘কনটেম্পোরারি বাংলাদেশি পোয়েট্রি’ (ফেরল প্রেস)। তাঁর কবিতা অনূদিত হয়েছে চোদ্দটি ভাষায়, স্থান পেয়েছে আঠারোটি আন্তর্জাতিক এন্থোলজিতে। তাঁর গ্রন্থ ‘আন্ডার দ্যা থিন লেয়ারস অব লাইট’ ইংরেজি, চাইনিজ ও পোলিশ ভাষায় অনূদিত হয়ে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট, তাইওয়ান ও পোল্যান্ড থেকে প্রকাশ পেয়েছে। তিনি আমন্ত্রিত কবি হিসেবে যোগ দিয়েছেন চীন, গ্রীস, পোল্যান্ড, ভারত, কানাডা, মেক্সিকো, কেনিয়া ও মরক্কোতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কবিতা উৎসবে। যুক্তরাষ্ট্রের লাইব্রেরি অব কংগ্রেসে এ পর্যন্ত স্থান পেয়েছে তাঁর লিখিত ২৭টি গ্রন্থ। হাসানআল আব্দুল্লাহ ‘শব্দগুচ্ছ’ কবিতাপত্রিকা সম্পাদক ও নিউইয়র্ক সিটি হাইস্কুলের গণিত ও কম্পিউটার বিষয়ে সিনিয়র শিক্ষক। ন্যাম ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত হবে তার যুদ্ধ বিরোধী দ্বিভাষিক কাব্যগ্রন্থ “দ্যা স্ক্যাটার্ড ডিসপ্লে অব লিমপস।‘