news52.com a e-news paper in Bengali and English with video excerpts.
Logo: NYnews52.com


ভয়



ভয় পাই চড়, লাথি
ভয় পাই কিলকে,
দূর থেকে ছুটে আসা
চৈত্রের ঢিলকে—

বাঘ সাপ কাঁকড়া
চুল যার ঝাঁকড়া
ভয় পাই বাজপাখি
নখঅলা চিলকে।

সন্ত্রাসী গুণ্ডা
ঠেলা গাড়ি হুন্ডা
খটখটে রোদ্দুরে
ভরা মতিঝিলকে।

ভয়ে মন কাতরায়
চারদিক হাতড়ায়
চোখ তুলে যদি চায়
বিটোফেন, রিলকে।

একগুচ্ছ ছড়া-কবিতা

মনসুর আজিজ

চমকে উঠি মধ্যরাতে


চমকে উঠি মধ্যরাতে ঘুমহারা দুই চোখ
চোখের ভেতর জোনির জ্যোতি আঁধার রাতের ঝোঁক
কলাগাছে বাদুর নাচে থোড় থেকে রস চোষে
শিমের পাতা শিউরে ওঠে মধ্যরাতের ওষে।

গোয়াল ঘরে বাছুর নাচে ঘন্টি গলায় বাঁধা
ছাগলছানা আড় চোখে চায় ঘাস খেয়ে যায় আধা
খোয়ার থেকে হাঁসের ছানা প্যাকপ্যাকানি হাসে
সদ্যজাত শিশুর কান্না বাতাসেতে ভাসে।

ছাতিমগাছে হুতুম পাখির ভয়াল করুণ ডাক
পুকুরটাতে ঢেউ তুলে যায় জিয়লমাছের ঝাঁক
মেঘের গায়ে আলোর রেখা পূর্ণিমা চাঁদ আকে
ভেলের জেলে মাছ ধরে যায় খালের বাঁকে বাঁকে।

চমকে উঠি মধ্যরাতে, ঘুমহারা এক কবি
লেখার খাতায় হরফ বোনে, নানান রঙের ছবি।

মনটা আমার ভরবে খুশির বানে

মনটা আমার যায় চলে যায় কাশবনের তীরে
উতল হাওয়া মনের ভিতর বইছে ধীরে ধীরে
টলটলানো রূপোর পানি বনের মাঝে ঝিল
দুপুর রোদে মেঘের মেয়ের ছায়াটা ঝিলমিল।

হাররা পেতে ঘুঘুর ছানা ধরার করি লোভ
ছিপ টেনে নেয় কাইক্কা মাছে রয় না তাতে ক্ষোভ
গুলতি মেরে কানিবকের পাটা করি লুলা
ডানকিনে মাছ চেবলি পুটি ভরায় আমার ডুলা।

ঠোঁটে বাজে পাতার বাঁশি নিঝুম দুপুর ক্ষণ
লোদ ভরা এই শরীর হলেও তরতাজা এই মন
বুনো ফুলের মালা পরে ডগমগে এই দেহ
মা জননীর খুশির বানে ভরবে আমার গেহ।

লাল সবুজের নাম

স্বাধীনতা রুয়ে দেই সবুজের বুকে
পথচলি লাল লাল ফুল ঘ্রাণ শুকে
লাল সবুজের নাম আমার এই দেশ
ফুল ফসলের ডালা আহা সুনিবেশ

স্বাধীনতা হয়ে যায় কিশোরের ঘুড়ি
মুক্ত আকাশ জুড়ে ছুটে যায় উড়ি
হৃদয়টা হয়ে যায় সুনীল আকাশ
তার পানে এই মন নিত্য তাকাস।

স্বাধীনতা হয়ে যায় নীড়হারা পাখিদের বাসা
স্বাধীনতা হয়ে যায় বোঁটা জুড়ে আম ডাঁসা ডাঁসা।
স্বাধীনতা বন্ধন হাতে হাত রাখা
তাপদেহে বাও দেয়া তালেরই পাখা।

আমার ছোট্ট সবুজ গ্রাম

আমার সবুজ অবুঝ মনের ছোট্ট সবুজ গ্রাম
মত্ত মাতাল আলতো দোলা মেঘনা নদীর ঢেউ
বুকের ছাতি ফুলায় তাতে পাল তুলে দেয় কেউ
নীল পেড়ে কোন বুবুর শাড়ির চুইয়ে পড়ে ঘাম।

আকাশ পানে পাখনা মেলে তাল সুপারির দোল
ঝিরি ঝিরি বাঁশের পাতা কলা পাতার টোল
বিলের জলে হাঁসের সারি সাদার রেখা আঁকে
ষোল কোটি মুখের তিয়াস কলসিতে বু’র কাখে।

লাল মরিচের ক্ষেতটা হাসে বাবার হাসির সাথে
নতুন গাভীর ওলানটাতে স্বপ্ন সুখের আভাস
নীল চাঁদোয়া তারার মাঝে আমার ছোট্ট আবাস
একটি সবুজ অবুঝ ভূমি নির্ঘুমই রয় রাতে।

সে সবুজের গ্রামটা আমার স্নেহের আঁচল মায়ের
দৃপ্ত পায়ে এগিয়ে চলা শক্তি সাহস ভায়ের
আমার সবুজ গ্রামটা হলো সূর্য ওঠা পুবের
অতল থেকে মুক্তা আনার কিশোর ছেলের ডুবের।

মাকে ভালোবাসি

মা যে আমার সন্ধ্যাকাশের তারা
খুঁজে পেলাম ঘরে ফেরার পথ
মা যে আমার জোসনা রাতের জ্যোতি
পূণ্য পথে জীবন চলে আমি হলাম সৎ।

মা যে আমার আঁধার ঘরের বাতি
তার আলোতে জ্ঞানের জগৎ পড়ি
মা যে আমার ভীরু মনের সাহস
মায়ের সাহস দিয়ে আমি পৃথিবীকে গড়ি।

মা যে আমার ভোরের মাখন আলো
কুসুম আলোয় এই প্রকৃতি জাগে
মা যে আমার বৃষ্টি মেঘের ধারা
ফসল হাসে যখন মায়ের ছোঁয়া মাঠে লাগে।

মা যে আমার শ্যামল গাছের হাসি
গাছের পাতা ফুলের মতো মাকে ভালোবাসি।