আজকের পৃথিবী আমাদের পৃথিবী
Present world is our world!
প্রথম পাতা
আইনি প্রশ্ন ।। ব্যারিস্টার নিঝুম মজুমদার
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধী সাইদীর একান্ত ভক্ত রংপুরের আবু সাঈদের মৃত্যু নিয়ে এটা একটা আইনি পোস্ট।
মূলত আইনজীবীদের সাথে একটা আলাপের জন্যই এই লেখাটা।
ফ্রেন্ড লিস্টে যারা নাই, তারা মেসেজ দিতে পারেন কিংবা শেয়ার দিয়ে আলাপ শুরু করতে পারেন।
আইনজীবী ছাড়া আলোচনায় অংশ নেয়াটা একটু ঝুঁকির কেননা পুরা বিষয়টা একটা মৃত্যুর ক্ষেত্রে আইনি আলাপ সংক্রান্ত।
আপনি বিষয়টা না জানলে আপনার কাছে বোরিং লাগতে পারে। অদ্ভুত লাগতে পারে। সো, এড়িয়ে যেতে পারেন।
আমি সাঈদের মৃত্যুর পুরো ভিডিওটা দেখলাম। যদিও তার মৃত্যুর পরের ময়না তদন্ত রিপোর্ট আমার কাছে নাই।
সাঈদ দুই হাত বাড়িয়ে পুলিশকে নির্দেশ দিচ্ছিলো যে গুলি করেন। ( আমার এই পর্যবেক্ষণ কি ঠিক?)
পুলিশ গুলি ছোড়ে। জানা যায় এটি রাবার বুলেট। অভিজ্ঞরা বলতে পারবেন এটি কি বুলেট।
রাবার বুলেটে সাধারণত মানুষ মারা যায়না। যদি যায়, অভিজ্ঞরা আলাপ করতে পারেন।
সাঈদের হাতে গুলি লাগলো। পায়ে লাগলো। সাঈদ বসে পড়লো।
কিছু তরুন বয়সী ছেলেরা সাঈদকে মাথা নীচু করে পা উপরে তুলে দ্রুত হাটা ধরলো।
বহনকারী তরুনেরা সাঈদকে দুইবার মাটিতে ফেলে দিলো। সাঈদের মাথা ছিলো নীচে। পা উপরে।
প্রশ্ন হতে পারে-
(১) সাঈদের মৃত্যুতে অপারেটিং এন্ড সাবস্টেন্সিয়াল কারন কোনটা? পুলিশের রাবার বুলেট নাকি তরুনদের দুইবার ফেলে দিয়ে আঘাত করা?
(২) এখানে কি but for test এপ্লাই হতে পারে?
(৩) Chain of causation কি broken already?
(৪) Novus actus interveniens থিয়োরি নিয়ে কি আলাপ উঠতে পারে এখানে? হলে সেটার ব্যাখ্যা কেমন হতে পারে?
(৫) যে তরুণেরা সাইদকে নিয়ে গেলো, তারা তাকে কোথায় নিয়ে গেলো শেষ পর্যন্ত? তাদের কি কোনো কিছু ভূমিকা ছিলো সাইদকে দুইবার মাটিতে ফেলে দেয়া ছাড়া?
(৬) বহন করা তরুনরা কি একিউসড হতে পারে, রাবার বুলেট ছোড়া পুলিশ সদস্যের সাথে সাথে?
(৭) সাইদের ময়না তদন্ত রিপোর্টে কি আছে?
(৮) এই ঘটনায় রিলেটেড কি কি কেইস রেফার্ড হতে পারে? আপনি ডিফেন্স আইনজীবি বা প্রসিকিউশন আইনজীবী হলে কি স্ট্রাকচার ফর্ম করতেন মামলার যুক্তি অংশে?
এটা পিওর আইনী আলাপ। বিষয়গুলো জানা না থাকলে আলাপ থেকে বিরত থাকার সনির্বন্ধ অনুরোধ জানাই।
কোটার আদ্যপান্ত
রেদওয়ান জুয়েল: সরকারী চাকরীতে কোটার পরিমাণ কমিয়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়ার দাবিতে বাংলাদেশ কোটা সংস্কার আন্দোলন সংগঠিত হয়। ২০২৪ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে মোট তিনবার কোটা সংস্কারের জন্য আন্দোলন করা হয়েছিল।
আপাত দৃষ্টিতে এখন অবধি এই আন্দোলনের পক্ষে সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থীরা এবং বিপক্ষে রয়েছে আওয়ামী লীগ ক্ষমতাধীন বাংলাদেশ সরকার, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের সমমতাবলম্বী সংগঠনসমূহ, যদিও সরকারও কোটার পক্ষেই কথা বলেছে।
সর্বপ্রথম কোটা সংস্কার আন্দোলন হয় ২০১৩ সালে এরপর ২০১৮ সালে। আন্দোলনের পর আন্দোলনকারীদের পক্ষে পরিপত্র ঘোষণা করা হয়। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক এই পরিপত্রটি ২০২৪ সালের অবৈধ ঘোষণা করায় পুনরায় আন্দোলন শুরু হয়।
২০১৩-এ বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ছিল দেশের সরকারি খাতে চাকরি সংক্রান্ত সরকারের নীতির বিরুদ্ধে একটি আন্দোলন। প্রথমে শাহাবাগ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও শেষ পর্যন্ত তা বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে।
দেশের বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মূল প্রতিবাদ আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করে এবং একই ধরনের দাবি নিয়ে মিছিল বের করে। এটি ২০১৩ সালে ঢাকার শাহবাগে বিক্ষোভের সামসময়িক একটি আন্দোলন, যেটি প্রায় একই সময়ে একই স্থানে হয়েছিলো।
২০১৩ সালের কোটা আন্দোলন সফলতার মুখ না দেখলেও এর ধারাবাহিকতায় ২০১৮ সালে বাংলাদেশে পুনরায় কোটা নিয়ে বড় ধরনের আন্দোলন সংগঠিত হয়।
২০১৮-এ বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ছিল বাংলাদেশে সব ধরনের সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে কোটার ভিত্তিতে নিয়োগের প্রচলিত ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে সংগঠিত একটি আন্দোলন।
১৯৭২ সাল থেকে চালু হওয়া কোটা ব্যবস্থার সংস্কারের দাবিতে চাকরি প্রত্যাশী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতৃত্বে ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে ধারাবাহিকভাবে বিক্ষোভ
এবং মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে। লাগাতার আন্দোলনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের ফলে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির সরকারি চাকরিতে ৪৬ বছর ধরে চলা কোটাব্যবস্থা বাতিল ঘোষণা করে সরকার।
পরবর্তীতে ২০২৪ সালের জুন মাসে বাংলাদেশ হাইকোর্ট বাতিলকৃত কোটা পুনরায় বহাল করে। যার ফলে পুনরায় ছড়িয়ে পড়ে আন্দোলন।
এই আন্দোলনে সারা বাংলাদেশের মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের সরকারী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সাধারণ শিক্ষার্থীদের দ্বারা শুরু হলেও পরবর্তীতে নটরডেম কলেজ, সেন্ট যোসেফ কলেজ, ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজ,
আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ, আইডিয়াল কলেজ, ঢাকা সিটি কলেজ, বিএএফ শাহীন কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ পাবলিক কলেজ, বীরশ্রেষ্ঠ মুন্সী আব্দুর রউফ পাবলিক কলেজ, প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি,
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ, আহছানউল্লা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, দনিয়া কলেজ, ডাঃ মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজ, এনাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজি,
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়, আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ, ইন্ডিপেন্ডেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি, সিটি ইউনিভার্সিটি,ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়, ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস
এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজি, সিভিল এভিয়েশন স্কুল এন্ড কলেজ, তেজগাঁও,মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সহ আরো অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ শুরু করে।
পরবর্তীতে কোটাবিরোধী আন্দোলনটি সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের কাছ থেকে ছিনতাই করে নিয়ে যায় জামায়াত-শিবির ও বিএনপি। ফলশ্রতিতে শতাধিক ছাত্রের প্রাণহানী ঘটে এবং সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড বহিরাগত সন্ত্রাসীরা পুড়িয়ে দেয়।
বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তী সহিংসতা ।। হাসানআল আব্দুল্লাহ
আমি একজন শহীদের সন্তান হয়েও কোটা সংস্কারের পক্ষে, তবে সেটা পুরোপুরি তুলে দেবার যুক্তি দেখি না। ফলত, এই আন্দোলন করতে গিয়ে যে সব ছাত্র নিহত হয়েছে, পূর্ণ তদন্ত করে হত্যাকাণ্ডে দায়ী ব্যক্তিদের শাস্তি নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
ছাত্রদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে যারা ইন্ধন দিয়ে সশস্ত্র আন্দোলনে পরিণত করেছে তাদেরও খুঁজে বের কোরে শাস্তির আওতায় আনা হোক। আর যে সব ছাত্ররা নিজেদের বা অন্যদের 'রাজাকার' বলছে, তাদের বলবো, বাবারা তোমরা এই ঘৃণা শব্দটি দ্বারা নিজেদের ক্ষোভ তুলে ধরার আগে ৭১-এ ওই
পশুদের পৈশাচিকতা আরেকবার স্মরণ করো। দেশকে ভালবাসো, 'রাজাকার'কে নয়, কারণ তোমরা মেধাবী। কোটা প্রথার সংস্কার হোক, মুক্তিযোদ্ধার সন্তানদের এই কোটার দরকার নেই। তারা গত ৫৩ বছরে যেমন নিজেদেরকে প্রমাণ করেছে, ভবিষ্যতেও তাই করবে। আমার বাবার রক্তে দেশ স্বাধীন হয়েছে, এর চেয়ে বড়ো কিছু আমার ও আমার সন্তানের চাওয়ার নেই।
কোটা সংস্কারের বিষয়ে আদালতের রায়ের পর ।। আসলাম আহমাদ খান
কোটা সংস্কারের বিষয়ে আদালতের রায়ের পর ছাত্র আন্দোলন আস্তে আস্তে স্তিমিত হয়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ শিক্ষার্থীদের দাবী পূরণ হয়েছে। তলে তলে সমঝোতায়ও হয়েছে। এই সমঝোতা তো তলে তলে হওয়ার প্রয়োজন ছিল না। প্রকাশ্যেই হতে পারতো। শিক্ষার্থীরা দেশ প্রেমিক। একথা সত্য যে, তাদের ঘাড়ের উপর অদৃশ্য শক্তি ভর করেছিল। কিন্তু সে দোষ তাদের না। একটা যৌক্তিক আন্দোলনে সকল শ্রেণীর মানুষ যুক্ত হতে পারে।আন্দোলনকারীরা বলতে পারবে না যে, অমুক সমর্থন দিও, তমুক সমর্থন দিও না। তারা ক্ষণে ক্ষণে দাবী পরিবর্তন করেছে। কারণ তারা সরকারকে আস্থায় নিতে পারছিলো না। এই অনাস্থার জায়গাটা সরকার তৈরী করেছে। শুরুতেই শিক্ষার্থীদের দাবী মেনে নিলে ওরা ঘরে ফিরে যেতো। আর সাধারণ শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরে গেলে মাঠে থাকতো শুধু ভিন্ন উদ্দেশ্য সাধনকারীরা। তারা তো ১৭ বছর ধরেই মাঠে আছে। কোন লাভ তো হচ্ছিলো না। এবারও হতো না। বরং শিক্ষার্থীদের দাবী মেনে নিলে সরকারের জনপ্রিয়তা বাড়তো। বিরোধী দলকে আরও ২৭ বছর মাঠের বাহিরে থাকতো। কিন্তু সরকারের ভুলের কারণে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে। একাত্তরের প্রফেশনাল গোর খোদকদের ক্ষুধিত আত্মারা এখনও সক্রিয় আছে— এটা কি সরকারের অজানা ?
আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে তারা বিভিন্ন জায়গায় ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ চালাচ্ছে। রাজধানীতে BTRC এর টাওয়ার ধ্বংস করেছে। গান পাউডার দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। গান পাউডার দিয়ে টাওয়ার পুড়াতে প্রফেশনাল দুষ্কৃতিকারীর প্রয়োজন। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষে এটা সম্ভব নয়। বাংলাদেশ ব্যাংক এবং গণভবনের ওয়েবসাইট হ্যাক করা, টোল প্লাজা লুট করা, জেলখানায় আগুন দিয়ে বন্দীদের ছেড়ে দেওয়া সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাজ নয়।
আমেরিকার পাতাল রেলের চেয়ে উন্নত মেট্রোরেলকে ধ্বংস করেছে। মেট্রো রেলের দু’টি স্টেশনের স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আনতে কমপক্ষে আরও মিলিয়ন ডলার খরচ হবে। সময় লাগবে এক বছরের বেশী।
BTRC -এর এই টাওয়ারের মাধ্যমে সাড়ে ছয় লাখ মানুষ আউট সোর্সিংয়ের কাজ করতো। ৫- নেটওয়ার্কের সঞ্চালন হতো এই টাওয়ার থেকে। আমেরিকা, ইসরায়েল, ইন্ডিয়ার পর বাংলাদেশে একমাত্র ৫-জি টাওয়ার ছিল। শেখ হাসিনা সরকারের যুগান্তকারী সাফল্যে একটি এই ৫-জি টাওয়ার।
ঘরে বসে মানুষ মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় করতো। তাদের আয়ের উপর নির্ভরশীল ছিল তাদের পরিবার। ধরা যাক এই সাড়ে ৬ লাখ মানুষের প্রতিজনের সঙ্গে ৩ জন নির্ভরশীল আছে, সাড়ে ছয় * গুণ তিন অর্থাৎ ২০ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান বিনষ্ট করেছে পরিকল্পিতভাবে। অনলাইন মার্কেটিং , ফেসবুক , ইউটিউব থেকে যার ইনকাম করতো সেগুলো এফেক্টেড হবে। BTRC -এর এই ৫-জি টাওয়ার নির্মাণ করতে ৬ বছর সময় লেগেছে, আরও ৬ বছর লাগবে রিবিল্ট করতে। খরচ লাগবে ২৫০ মিলিয়ন অর্থাৎ ২৫ হাজার কোটি টাকা। টাকা না হয় যোগাড় করলো , কিন্তু এর মাঝে এর মাঝে আউট সোর্সিংয়ের অর্ডারগুলো কেনসেল হয়ে যাবে। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, আর আমরা বারবার পিছিয়ে যাচ্ছি। ২০০০ সালে খালেদা জিয়া সাবমেরিন ক্যাবল এর সংযুক্ত হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ হেলায় হাতছাড়া করেছিল, ২০০৯ সালে শেখা হাসিনা ক্ষমতার এসে আরও অনেক বেশী টাকা খরচ করে সেই নেটওয়ার্কের সঙ্গে বাংলাদেশকে যুক্ত করেছিল। এখন ধ্বংস করা হয়েছে BTRC ‘র টাওয়ারটি।
শুধু BTRC টাওয়ার নয়, এ দেশটিকে ধ্বংস করার জন্য সমস্ত প্রস্ততি নিয়ে তারা মাঠে নেমেছিল, তা নাহলে জেলখানায় আগুন দেবে কেন ? দেশের রাস্তা-ঘাট, ঘর-বাড়ি, আগুনে পোড়া যানবাহনের দিকে তাকালে মনে হবে যুদ্ধ বিধ্বস্ত কোন দেশ। কোমলমতি ছাত্রদের কাছে যেটা আন্দোলন, জামাত- শিবিরের কাছে সেটা যুদ্ধ, ধ্বংসাত্মক এই যুদ্ধের মাধ্যমে ওরা একাত্তরের পরাজয়ের প্রতিশোধ নিতে চায়।
(২৩ জুলাই, ২০২৪)
নাশকতার কাঁটা মাড়িয়ে এগিয়ে যেতে হবে ।। ড. মিল্টন বিশ্বাস
২৪ জুলাই(২০২৪) ফেসবুক সক্রিয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুষ্কৃতিকারীদের সমর্থক গোষ্ঠী লিখতে শুরু করেছে, ‘‘জুলাই-এর পর কিন্তু ১৫ আগস্ট।’’
অর্থাৎ তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ১৯৭৫ সালের ঘটনা স্মরণ করিয়ে হুমকি দেওয়া শুরু করেছে। এতোদিন কষ্ট করে যে বাংলাদেশের উন্নয়ন করলেন,
মানুষের ভোট ও ভাতের দাবি নিয়ে লড়াই করলেন জননেত্রী- মুহূর্তে ভুলে গিয়ে স্পর্ধা দেখানো আরম্ভ করেছে বিপথগামীরা।
আসলে বেঈমান ও নিমকহারাম জাতির সন্তান এরা। সামষ্টিক মঙ্গল চিন্তায় যেখানে শেখ হাসিনা দিনরাত পরিশ্রম করে চলেছেন সেখানে মীমাংসিত
এবং তুচ্ছ বিষয়কে কেন্দ্র করে ১৫ আগস্টের নির্মম ঘটনা স্মরণ করিয়ে দেওয়া কতটা অপরাধ এটাও কি তাদের বুঝিয়ে দিতে হবে?
এদের মগজ ধোলায় করেছে কারা? নিশ্চয় বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের দোসররা। নিশ্চয় জামায়াত-বিএনপি দলের নেতা-কর্মীরা।
এজন্য নাশকতার কাঁটা মাড়িয়ে এগিয়ে যেতে হবে উন্নয়নের উচ্চ শিখরে।
১৭ জুলাই(২০২৪) আশুরার ছুটি ছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে অফিসে উপস্থিত থাকার জন্য বলা হলে সেখানে বিকেল ৩টায় হাজির হলাম। জগন্নাথের গেট দিয়ে ঢুকতেই দেখলাম কয়েকশত তরুণ-তরুণী লাঠি হাতে এদিক-সেদিক টহল দিচ্ছে। মনে হলো ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের খুঁজছে। আমাকে কেউ চিনতে পারল না। ভাবলাম প্রায় ২০ হাজার শিক্ষার্থীর যারা তৎপরতায় জড়িত তাদের কেউ-ই কি আমাকে চেনে না? এটা ভালই। ঘণ্টাখানেক ক্যাম্পাসে থাকলাম। দেখলাম মারমুখি শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের কাছে দাবি জানাচ্ছে- ছাত্রলীগের রাজনীতি বন্ধ করা থেকে শুরু করে ছাত্রীরা হল ত্যাগ করবে না-ইত্যাদি। সকালে সিন্ডিকেট সভা পরিচালনা করে হল ও বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম। কিন্তু বিকেল ৩টায় জানলাম একমাত্র ছাত্রী হলের শিক্ষার্থীরা হল ত্যাগ না করে প্রভোস্ট ও হাউজ টিউটরদের জিম্মি করে রেখেছিল। শেষাবধি তাদের দাবি মেনে নিয়ে মুক্তি পেয়েছেন দায়িত্বপ্রাপ্ত অধ্যাপকরা। প্রকৃতপক্ষে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যতটা শিক্ষার্থী বান্ধব এবং সমস্যা ও সংকট নিয়ে আন্তরিক ততটা ছাত্রদের তরফ থেকে সৌজন্য রক্ষার মানসিকতা প্রকাশ্যে দৃষ্টিগোচর হলো না। তাছাড়া আগের দু’দিনে অধ্যাপকদের গায়ে হাত উঠিয়েছে বলে শিক্ষকরাও আতঙ্কে শিক্ষার্থীদের এড়িয়ে চলছে। সকলেই একমত যে শিক্ষার্থীরা তাদের সীমা লঙ্ঘন করা শুরু করেছে। ইতোমধ্যে আমি দৈনিক পত্রিকায় কোটা দাবি নিয়ে কলাম লিখেছি। এবং বলেছি যে, আন্দোলনে বিএনপি-জামায়াত ইন্ধন দিচ্ছে। উপরন্তু ‘‘যে কারণে কোটা থাকা দরকার’’ শিরোনামেও অন্য একটি মিডিয়াতে কলাম লিখেছি। টকশোতে কথা বলেছি সরকারের নীতির পক্ষে। অথচ বিস্ময়কর হচ্ছে দাবিতে সক্রিয় কেউ আমার লেখা দেখিনি বা পড়েনি। এজন্য একই গেট দিয়ে যখন ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে এলাম তখনও লক্ষ করলাম কেউ আমাকে চেনে না। বেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে মনে হলো আমার বিভাগের একজনও শিক্ষার্থী নেই এই দাবিতে? তাহলে কি বহিরাগতরা এই মারমুখি কোটা দাবিতে সরব। হামলার জন্য প্রস্তুতি যারা নিয়েছে তারা কি তবে সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের বাইরের কেউ? এসব ভাবতে ভাবতে আতঙ্ক ও দুঃশ্চিন্তায় রাত অতিবাহিত হলে ১৮ জুলাই দেখা গেল দাবি আদায়ের লড়াইয়ের প্রকৃত চিত্র। ২২ জুলাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বললেন, ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে বিএনপি ও জামায়াত। নৈরাজ্যবাদীরা দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য দেশে ও বিদেশে অব্যাহতভাবে অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে কোটা সংস্কারের নামে নাশকতার আশঙ্কা রয়েছে বলে রাজনীতিবিদদের যে ধারণা ছিল তা সত্যে পরিণত হয়েছে। কোটাবিরোধী আন্দোলনের নেপথ্যে বিএনপি-জামায়াত কলকাঠি নাড়িয়েছে। চলমান আন্দোলনে তারা সমর্থন দেওয়ায় সেই ধারণা প্রবল হয়েছে। বিএনপি-জামায়াত শিক্ষার্থীদের আন্দোলন রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করেছে। আন্দোলনের নামে দেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা নষ্ট করেছে। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত সফল হয়নি যদিও কিন্তু আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রভূত।
২১ জুলাই রায় ঘোষিত হলো। বীর মুক্তিযোদ্ধা, শহীদ মুক্তিযোদ্ধা ও বীরাঙ্গনার সন্তানদের জন্য ৫ শতাংশ। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য ১ শতাংশ এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য ১ শতাংশ। নারী কোটা না থাকায় প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেল চাকরিতে নারীদের জন্য কোটা না থাকলে বৈষম্য আরও বাড়বে। সবই হলো কেবল থামল না সহিংসতা। ২৩ জুলাই পত্রিকায় দেখলাম ততদিনে শতাধিক মানুষের প্রাণ গেছে। দেশে কারফিউ জারি হয়েছে। তবে ওইদিন সংঘাত-সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। ১৮ থেকে ২২ জুলাই ঢাকায়ে রেলের ক্ষতি হয়েছে ৬ থেকে ৭ কোটি টাকা, চট্টগ্রামে ১০ লাখ। মেট্রোরেল যে ধ্বংসযজ্ঞের শিকার হয়েছে তা মেরামত করতে সময় লাগবে প্রায় ১ বছর। একশতের বেশি যাত্রীবাহী বাস পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। ধ্বংস করা হয়েছে টোল প্লাজাসহ অনেক সরকারি অবকাঠোমো। শাটডাউন আর কারফিউ সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষের জীবন ধারণের ন্যূনতম অধিকার হরণ করে নিয়েছে। কেবল কোটা দাবি’র যাঁতাকলে পিষ্ঠ হয়ে অস্থিরতা ও অনিশ্চয়তার কারণে দেশের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটেছে। এমনকি উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হলেও বিদেশে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা দেশে ফিরতে আগ্রহ হারাবে স্বাভাবিকভাবে। ইতোমধ্যে তারা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করা শুরু করেছে। অস্থিতিশীল রাজনৈতিক অবস্থা কারো কাম্য নয়।
প্রগতিশীল সাংবাদিক সমাজ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সহিংসতার পূর্বাপর ঘটনা উল্লেখ করেছে। একটি অংশ যেমন-‘‘সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলা আন্দোলনের মধ্যে একদল দুষ্কৃতকারী সরকারি স্থাপনায় নজিরবিহীন তাণ্ডব চালিয়েছে। যাত্রাবাড়ীতে মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজায় আগুন দেওয়ার মাধ্যমে শুরু হওয়া এ তাণ্ডবে একে একে পুড়েছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বনানী ও মহাখালী টোলপ্লাজা, বিটিভি ভবন, সেতু ভবন, মেট্রোরেলের স্টেশন। রক্ষা পায়নি ফায়ার সার্ভিসও। মিরপুর-১০-এর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে হামলা চালানো হয়েছে। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি। দুষ্কৃতকারীদের হামলায় আহত হয়েছেন ফায়ার ফাইটাররাও। দুষ্কৃতকারীদের হাতে তাণ্ডবের শিকার হয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আঞ্চলিক কার্যালয়, মিরপুরের ইনডোর স্টেডিয়াম। বিআরটিএ ভবন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ভবন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মতো সরকারি স্থাপনায়ও তাণ্ডব চালিয়েছে দুষ্কৃতকারীরা। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে পুলিশ ফাঁড়ি ও ট্রাফিক বক্স। হামলা চালানো হয়েছে অনেকগুলো থানায়। স্বাধীন বাংলাদেশে এর আগে কখনো সরকারি স্থাপনায় এভাবে তাণ্ডব চালানো হয়নি।
শুধু রাজধানীতে নয়, দুষ্কৃতকারীরা তাণ্ডব চালিয়েছে ঢাকার বাইরেও। নরসিংদীতে জেলা কারাগার এবং পৌরসভা ও ইউনিয়ন কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে। নরসিংদীতে কারাগার ভেঙে ৯ জন জঙ্গিসহ ৮২৬ বন্দি পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। নারায়ণগঞ্জে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস, সিটি করপোরেশনের নগর ভবনে চালানো হয়েছে তাণ্ডব। দুষ্কৃতকারীদের তাণ্ডবে রাজধানীসহ সারাদেশে জনমনে সৃষ্টি হয় উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। পরিস্থিতি সামাল দিতে একপর্যায়ে কারফিউ জারি করে সরকার। সেই সঙ্গে নামানো হয় সেনাবাহিনী। এতে অনেকটাই ঘরবন্দি হয়ে পড়েন মানুষ। প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে খুব একটা বের হননি। তবে সেনাবাহিনী রাস্তায় নামার পর অল্প সময়ের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসে। ফলে শিথিল করা হয় কারফিউ।
২১ থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সরকার সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলেও বুধবার থেকে সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া হয়েছে সরকারি-বেসরকারি অফিস। সীমিত পরিসরে চলছে ব্যাংকিং কার্যক্রম। ব্যাংক খোলায় শেয়ারবাজারেও লেনদেন চালু করা হয়েছে। রাস্তায় চলাচল করছে গণপরিবহন। ফলে মানুষের মনে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। তবে দুষ্কৃতকারীরা যে তাণ্ডব চালিয়েছে তার ক্ষত কতদিন বহন করতে হবে সেটিই এখন দেখার বিষয়।
কোটাবিরোধী আন্দোলন চলার মধ্যে ১৭ জুলাই যাত্রাবাড়ী অঞ্চলের রাস্তা অবরোধ করে একদল দুষ্কৃতকারী। একপর্যায়ে যাত্রাবাড়ী অঞ্চলে শুরু হয় সংঘর্ষ। রাতে হানিফ ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজায় দেওয়া হয় আগুন। রাতভর দুষ্কৃতকারীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের যাত্রাবাড়ী এলাকায় তাণ্ডব চালায়। পরদিন বৃহস্পতিবারও এ এলাকা ছিল আন্দোলকারীদের দখলে। সেসঙ্গে দ্বিতীয় দফায় হানিফ ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজায় আগুন দেওয়া হয়। হামলাকারীরা রড-লাঠি নিয়ে দল বেঁধে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অবস্থান নেয়। সেই সঙ্গে তাণ্ডব চালানো হয় একের পর এক সরকারি স্থাপনায়। আগুন দেওয়া হয় বিআরটিএর ডেটা সেন্টারে। ফলে বন্ধ হয়ে যায় ইন্টারনেট সেবা। এতে গ্যাস-বিদ্যুৎ নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েন রাজধানীর বাসিন্দারা। নানা শঙ্কা দানা বাঁধে জনমনে। ছয়দিন বন্ধ থাকার পর ২৩ জুলাই রাতে সীমিত পরিসরে ব্রডব্যান্ড সেবা চালু করা সম্ভব হয়েছে।
এর আগে ২২ জুলাই নিজ কার্যালয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে সরকারি বিভিন্ন স্থাপনায় হামলার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিটিভি ভবনে আগুন দেওয়া হয়েছে, সেতু ভবনে আগুন দেওয়া হয়েছে, মহাখালী ডেটাবেজ স্টোরেজে হামলা-আগুন, মেট্রোরেলের স্টেশনে হামলা, শনির আখড়ায় হানিফ ফ্লাইওভারের টোল বক্সে হামলা, পিবিআই অফিসে আগুন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে আগুন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের টোল প্লাজায় আগুন। নরসিংদীতে কারাগারে হামলা করে কয়েদিদের বের করে নিয়ে যাওয়া, কয়েকজনকে ধরা হয়েছে। বৈঠকে ব্যবসায়ীরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে থাকার অঙ্গীকার করেন। সেসঙ্গে বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা করা দুষ্কৃতকারীদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।’’
তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত একইভাবে উপরের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে বলেছেন, ‘‘আক্রমণগুলো পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে। জঙ্গিরা যেভাবে আক্রমণ করে সেভাবে। তিনি বলেন, ডেটা সেন্টার জালিয়ে দেওয়া হয়েছে যেন ইন্টারনেট বন্ধ থাকে, দেশ অচল হয়ে যায়। কেপিআই ভবনে কারা আক্রমণ করে? ডেটা সেন্টার পুড়িয়ে দিয়েছে, বিটিভি জ্বালায়ে দিয়েছে, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম বিটিসিএল ল্যান্ডলাইন জ্বালিয়ে দিয়েছে। সেতু ভবন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, মেট্রোরেলের গুরুত্বপূর্ণ অংশ জ্বালিয়ে দিয়েছে। উন্নয়ন যেখানে হয়েছে সেখানেই হামলা হয়েছে। হানিফ ফ্লাইওভারের টোলপ্লাজায় আগুন দেওয়ার পর ১৮ জুলাই বিআরটিএর প্রধান কার্যালয় হামলা চালানো হয়। এরপর শুক্রবার আবার বিআরটিএ’-র প্রধান কার্যালয়ে হামলা চালানো হয়। হামলা চলানো হয় বিআরটিএ’-র মিরপুর কার্যালয়ে। বিআরটিএ ভবনের বিভিন্ন তলায় ভাঙচুর চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়
ন্যাম আন্তর্জাতিক কবিতা পুরস্কার পেলেন কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ
এনওয়াইনিউজ৫২: ২২তম ন্যাম আন্তর্জাতিক কবিতা পুরস্কার পেলেন কবি ও শব্দগুচ্ছ সম্পাদক হাসানআল আব্দুল্লাহ। লেবাননে অবস্থিত ন্যাম ফাউন্ডেশনের হেডকোয়ার্টার থেকে সোমবার এই পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। মোট চারটি শাখায় বিশ্বের নানাদেশের কবিদের এই পুরস্কার দেয়া হয়। হাসানআল আব্দুল্লাহ পুরস্কারটি পেয়েছেন ক্রিয়েটিভিটি ক্যাটাগোরিতে। এর আগে এবছর জানুয়ারি মাসে হাসানআল আব্দুল্লাহকে এই পুরস্কারের জন্যে নমিনেশন দেন পোলিশ রাইটার্স ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট কবি কাজিমেয়ারেজ বুরনাত। পুরস্কার পাওয়ার পর কবি ন্যাম ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ জানান। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন কবি কাজিমেয়ারেজ বুরনাতের প্রতিও। উল্লেখ্য কবি হাসানআল আব্দুল্লাহ ইতিপূর্বে আরো দুটি আন্তর্জাতিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ২০১৬ সালে পেয়েছেন হোমার ইয়োরোপিয় কবিতা পুরস্কার ও ২০২১ সালে পেয়েছেন ক্লেমেন্স জেনেস্কি কবিতা পুরস্কার। তাছাড়া তিনি নিউইয়র্ক কালচারাল এফেয়ার্স থেকে পেয়েছেন অনুবাদ গ্রান্ট (২০১৯), নতুন ধারার স্বতন্ত্র সনেটের জন্যে লেবুভাই ফাউন্ডেশন পুরস্কার (২০১৩), পুশকার্ট নমিনেশন ও ২০০৭ সালে তিনি কুইন্স পোরো পোয়েট লরিয়েট ফাইনালিস্ট-এর গৌরব অর্জন করেন। সাহিত্যের নানা শাখায় কবি হাসানআল আব্দুল্লাহর প্রকাশিত গ্রন্থসংখ্যা পঞ্চাশের অধিক। অনন্যা প্রকাশনি থেকে দুইখণ্ডে প্রকাশ পেয়েছে তাঁর ‘কবিতাসমগ্র’। দেশের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো হয় তাঁর বই ‘কবিতার ছন্দ’ (বাংলা একাডেমি)। তিনি সম্পাদনা করেছেন ‘বিশশতকের বাংলা কবিতা’ (মাওলা), ও ‘ওয়ার্ল্ড পোয়েট্রি অন্থোলজি’ (ডার্কলাইড পাবলিশিং)। অনুবাদ করেছেন ‘কনটেম্পোরারি বাংলাদেশি পোয়েট্রি’ (ফেরল প্রেস)। তাঁর কবিতা অনূদিত হয়েছে চোদ্দটি ভাষায়, স্থান পেয়েছে আঠারোটি আন্তর্জাতিক এন্থোলজিতে। তাঁর গ্রন্থ ‘আন্ডার দ্যা থিন লেয়ারস অব লাইট’ ইংরেজি, চাইনিজ ও পোলিশ ভাষায় অনূদিত হয়ে যথাক্রমে যুক্তরাষ্ট, তাইওয়ান ও পোল্যান্ড থেকে প্রকাশ পেয়েছে। তিনি আমন্ত্রিত কবি হিসেবে যোগ দিয়েছেন চীন, গ্রীস, পোল্যান্ড, ভারত, কানাডা, মেক্সিকো, কেনিয়া ও মরক্কোতে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কবিতা উৎসবে। যুক্তরাষ্ট্রের লাইব্রেরি অব কংগ্রেসে এ পর্যন্ত স্থান পেয়েছে তাঁর লিখিত ২৭টি গ্রন্থ। হাসানআল আব্দুল্লাহ ‘শব্দগুচ্ছ’ কবিতাপত্রিকা সম্পাদক ও নিউইয়র্ক সিটি হাইস্কুলের গণিত ও কম্পিউটার বিষয়ে সিনিয়র শিক্ষক। ন্যাম ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত হবে তার যুদ্ধ বিরোধী দ্বিভাষিক কাব্যগ্রন্থ “দ্যা স্ক্যাটার্ড ডিসপ্লে অব লিমপস।‘