সময়কে এইভাবে ভেঙে টুকরো টুকরো
|
হাসানআল আব্দুল্লাহ'র একগুচ্ছ ছড়া-কবিতা চাঁদা তোলা কালাচান সাদাচান দুই ভাই চাঁদা চান নীলক্ষেতে চাঁদা চেয়ে ঘোরতর বাঁধা পান। একদল ছাত্রে কষে বেঁধে রাত্রে কাঁচি দিয়ে দু’জনেরই কেটে দেন আধা কান— কালাচান সাদাচান কই আর চাঁদা চান! নাকের ডাক আমার দাদার নানার দাদার মস্ত বড়ো নাক ছিলো নাকের উপর তারচে’ বড়ো পল্লী গাঁয়ের টাক ছিলো। চরতো গরু, খেলতো রাখাল, তখন দেশে ছিলো যা কাল! ঢাকার মতো গাছের ডালে এতো কি আর কাক ছিলো! কিন্তু দাদার নানার দাদায় হঠাৎ পড়ে কি এক ধাঁধায় ঘুমিয়ে গেলে নাকের বাঁশি বাঘের মতো ডাকছিলো। সেই না ডাকে উড়ো জাহাজ আকাশ দিয়ে ভাগছিলো। বাবা ও আমি বাবা আমার মিষ্টি ফাগুন সাত সকালে শিশির ছোঁয়া দুষ্টু হাওয়া। এইতো কাছে, এইতো দূরে; লুকোচুরি করে হঠাৎ হারিয়ে যাওয়া। বাবা আমার জলের ঢেউয়ে ঝিকিমিকি আলোর খেলা, পাতায় ফুলে হেলে দুলে অনেক প্রজাপতির মেলা। সাগর তীরে একখানা ঘর ছোট্ট বেলার বাকুম বাকুম সেই কবুতর। বাবা আমার আকাশ নীলে হাজার তারার আলিঙ্গনে আলোয় ভরা একখানা চাঁদ, ধারাপাতের সকল নিয়ম কানুন শেষে নতুন নতুন অংক কষার আমলকি সাধ। দু’চোখ ভরা জল যে বেলায় গড়িয়ে পড়ে কপোল বেয়ে সেই অবেলার বন্ধু অতি, আমার সকল শিরায় শিরায় তরুণ খুশীর বনস্পতি। গোলাপ টগর জুঁই চামেলী গাঁদা জবা এবং বেলী আরো কতো অচেনা ফুল, বাবা আমার কূলের সীমা ঘোর হতাশায় হারালে কূল। বাবা আমার রঙ বেরঙের কাগজ ছাওয়া আকাশ তলে ঝাঁঝর ঘুড়ি আমার বেলা, সকল খেলা, ইচ্ছা এবং অনিচ্ছাতে বাবা ও আমি মানিক জুড়ি। মধুমতি গেরামের পার্শ্ব দিয়ে মায়া সুর ছন্দ নিয়ে যেনো কোন্ কলাবতী কলোকল তার যে ধারা জাগিয়ে স্বপ্ন সাড়া বয়ে যায় মধুমতি। তারই সে স্বচ্ছ জলে বালি হাঁস দলে দলে সারাদিন পাগলপারা— পাখিদের সুর ও গানে এখানে অন্য প্রাণে প্রাণময় সবুজ ধারা। দু’ধারে বন পাকুড়ী সাজানো স্বর্গপুরী, সোনা-রঙ তিলক আঁকা সকালে সূর্য এসে সোনালি আলোয় হেসে করেছে স্বপ্ন মাখা। এমনই শীতল হাওয়া কোথাও যায় কি পাওয়া যা আছে নদীর ধারে? শিহরণ সবার মনে যেনো কোন্ স্বর্গ কোণে থাকি সব সমাহারে। চাঁদের ডাক ভাসছে যখন চাঁদের থালা আকাশ নীলে জোয়ারে, এমন সময় ডাক দিলো কে ঘরের কাকাতুয়ারে! কাঁঠাল পাতার ঝিকিমিকি, তালের পাতার আবেশে দূর্বা ঘাসের বুকের ভেতর শিশির হয়ে যাবে সে। কলাগাছের ঝাড়ের কাছে জোনাক পোকার মিতালি, বাগান ভরা আলোর মেলা ঝিঁঝি বাজায় কি তালি! হাসনা হেনার গন্ধে মাতন পাগলা ভোলা বাতাসে, উথাল পাথাল নদীর বুকে সুখের মতো রাত আসে। কে যায় উড়ে ওই ওখানে সাদা মেঘের ভেলাতে? কাকাতুয়া খোকনটাকে ডাকছে রাতের বেলাতে! |