Back to Front Page বেলাল বেগের অন্যান্য লেখা: |
মুক্তচিন্তা কিসের এতো কথা বেলাল বেগ সাবধান বাঙালী! এখন যুদ্ধাবস্থা
বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে স্বাধীনতার শত্রুজোট বাঙালী বিশ্বাসঘাতকদের মাধ্যমে গোপনে বাংলাদেশের দখল নিয়েছিল ১৯৭৫ সনে। কিন্তু বাঙালী পরাজয় মানে না। সুতরাং স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারে আবার একটা যুদ্ধ ছিল সময়ের ব্যাপার। শত্র“রাও তা জানত। তাই গত প্রায় এক দশক ধরে বোমাবাজি করে তারা তাদের শক্তির জানান দিয়ে রেখেছে। এসব শত্র“ বাইরের নয়,ঘরের মানুষ; তাদের ভুল শোধরানোর সময় দেয়া উচিৎ। বাংলার উদার জনতা তাই ওদের সময় দিয়েছিল সুদীর্ঘকাল। বিনিময়ে তারা নৃশংস, রক্তলোলুপ বোমা হামলা পেয়েছে। ক্র“দ্ধ জনগন শেষ পর্যন্ত শত্র“ উচ্ছেদে রায় দিয়ে দেয় গত নির্বাচনে। জনগনের সরকার কথা রেখে স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের যুদ্ধে নেমেছে। জনগনের এ যুদ্ধে প্রথম কামানের গোলা ছিল বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার। প্রথম যুদ্ধে জনতা জয়লাভ করেছে। ঐ সীমান্তে বাকী শত্র“দের ধরা ও মারার প্রচেষ্টা অব্যাহত আছে এবং পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ সরকারের হাতে রয়েছে। আমরা এখন শান্তমনে অপেক্ষা করছি জেলখানা হত্যাকান্ডসহ সকল রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের বিচারের রায় শোনার জন্য। এ সীমান্ত দখলে আসায় যুদ্ধ এখন চলে গেছে প্রধান সীমান্তে- একাত্তরের ঘাতক, দালালদের নির্মূলে। এখানে যুদ্ধ মুখোমুখি। একাত্তরের শত্র“ উচ্ছেদের যুদ্ধটাই প্রধান যুদ্ধ। এটি জটীল এবং দুঃসাহসীও বটে। রক্তপাত এক রকম অবশ্যম্ভাবী। স্বাধীনতার এ শত্রুরা সরাসরি একাত্তরের শত্র“রাষ্ট্র পাকিস্তানের অঘোষিত নাগরিক। তারা এখনো একাত্তরের রণাঙ্গনে থেকেই বাঙালী ও বাংলাদেশের আদর্শের বিরুদ্ধে রক্তাক্ত লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। একাত্তরের রাজাকার-আলবদর শীর্ষ নেতাদের জেলে ঢুকিয়ে নির্মূল অভিযান শুরু হবার পরেও তারা নিজেদের শক্তির দাপটে এটাকে গা করছে না। ফাঁসির আগে বাংলাভাই বলছিল তাদের লক্ষ লক্ষ প্রশিক্ষিত অস্ত্রধারী আছে। পত্রিকাতেও দেখা যায়, সারা দেশে ধরপাকড় শুরু হবার পরেও এখানে সেখানে তাদের গোপন সসস্ত্র প্রস্তুতি চলছে। ছাত্র শিবিরের নেতা এই সেদিন প্রকাশ্যে বলল, তাদের ৪১ লক্ষ সদস্যের বাহিনী আছে। ২১শে আগষ্ট শেখ হাসিনাকে হত্যার আক্রমণ ত প্রকৃতপক্ষে যুদ্ধ হামলাই ছিল। একাত্তর বিরোধী শিবির জনগনকে ভেড়া এবং একাত্তর-বলীয়ান সরকারকে মেষপালক বালক মনে করে এতদিন ভয় দেখানো ধমকি-ধামকি দিয়েছে। এখন যখন ট্রাইবুন্যাল গঠন শেষে নিজামীদের শ্রীঘরে ঢোকানো হল এবং কোন আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া এল না , একাত্তর-বিরোধী শিবির হঠাৎ ভ্যবাচেকা খেয়ে দেখল তাদের বিরুদ্ধে আসলেই যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। এ অবস্থায় তারা আর বসে থাকবে না। একটা মরণ-কামড় অবশ্যই দেবে। বাংলাদেশে জামাতই পাকিস্তানের একমাত্র বন্ধু। জামাতকেই প্রতিষ্ঠা করতে মুসলিম লীগের লেবাস পরিয়ে হাবি-জাবি মতের ও পথের একপাল ধান্ধাবাজ মানুষ নিয়ে জিয়াউর রহমান ও তার উপদেষ্টারা বিএনপি গঠন করেছিল। সুতরাং জামাত ও বিএনপি বাংলাদেশ আদর্শের কোন রাজনৈতিক দল নয়, এগুলি ষড়যন্ত্রের অস্ত্র ও কৌশল মাত্র। পরস্পরের স্বার্থেই এরা একে অপরের শক্তি ও অবল¤¦ন। স্বভাবতঃই জামাত আশা করেছিল তাদের এ জীবন-মরণের দিনে বিএনপি সর্বশক্তি নিয়ে তাদের পাশে এসে দাঁড়াবে। কথামত, বিএনপি তাদের সর্বশক্তি নিয়ে হরতাল ও মানব-বন্ধন নামক অস্ত্র নিয়ে পাশে নিয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু ভেজাল বারুদের কারণে তাদের অস্ত্র ফুটেনি। জনগন তা দেখে ফেলেছে। পুলিশের পিটুনি খেয়ে বিএনপি জামাত নিজেরাই বুঝে ফেলেছে এতকাল বাঘ এসেছে বাঘ এসেছে বলে চীৎকার করার পরেও জনগন তাদের বিশ্বাস করেনি। এখন সত্যিকার বাঘেরই মুখে পড়েছে জামাত-বিএনপি। বাংলাদেশের গনহত্যার ব্যাপকতা ও নৃশংসতা স¤¦ন্ধে অন্ধকারে থাকা বিশ্ব জনমত এখন ক্রমশঃ সোচ্ছার হচ্ছে। যত দিন যাবে হো চে মীন, ফিডেল ক্যাস্টরো, নেলসেন ম্যান্ডেলা, ইয়াসের আরাফত পর্যায়ের জাতীয় ও বিশ্বনেতা, বঙ্গবন্ধুর হত্যার নৃশংসতার কথাও পুনরায় বিশ্ববাসীর নজরে আসবে। অন্যদিকে এ সময়ে আমাদের গনতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার সংগ্রামও দৃঢ়ভাবে এগোচ্ছে। এ অবস্থায় স্বাধীনতার শত্র“মুক্ত বাংলাদেশ গঠনে আমরা আবারো একাত্তরের মত বিশ্বের সমর্থন পাব । লক্ষ লক্ষ বাঙালীর রক্ত এবং শত সহস্ত্র মা-বোনের ইজ্জতের সংগে যারা বিশ্বাসঘাতকতা করেছে ওরা অমানুষ। ওরা হৃদয়হীন, নিষ্ঠুর, খুনি। ওদের কিছুতেই বিশ্বাস করা চলে না। যারা একজন স্বেচ্ছায় জান দেয় পঞ্চাশ জন মানুষ হত্যা করতে, তারা নরখাদক বাঘের চেয়েও ভয়ঙ্কর। যারা এক সংগে সারা দেশে বোমা-উৎসব করে, তারা যে কোন দিন যে কোন স্থানে যখন তখন আমার-আপনার প্রাণহানির কারণ হতে পারে। অতএব লেজে পা পড়া শত্র“ থেকে সাবধান। জামাত-বিএনপি কখনো জনগনের মিত্র হতে পারে না; তারা পরিত্যাজ্য। সরকার হিসাবে আওয়ামি লীগ যদি অপাংত্তেয় হয়, জনগনের উচিৎ নতুন পার্টি বানানো । জামাত-বিএনপির জন্য থাকুক বিস্মৃতির সমাধি। |
।।এই লেখাটি সম্পর্কে আপনার মতামত দিন।।