NYnews52.com a e-news paper in Bengali and English with video excerpts.
Logo: NYnews52.com

Back to Front Page

বেলাল বেগের অন্যান্য লেখা:

  • যুদ্ধাপরাধীদের বিচার
  • একজন সোনার মানুষ দেখেছি
  • বাংলাদেশের রাজনৈতিক চিকিৎসা
  • রাজনীতিবাজ রাজনীতিবীদ ও জনগণ
  • চীৎকার সংস্কৃতি
  • ফালতু চীৎকার
  • পুরানো ক্ষতে খোঁচার যন্ত্রণা
  • নিমতলীর নরককুণ্ড বাংলাদেশের নিয়তী
  • মুক্তচিন্তা


    কিসের এতো কথা


    বেলাল বেগ

    কে বাঁচাবে বাংলাদেশ?


    যারা স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিল এবং পাকিস্তানের সংগে একযোগে বাঙালি ‘জেনোসাইড’-এ হায়েনার মত অংশ নিয়েছিল, বাংলাদেশে তাদেরই ক্ষমতারোহণ বিশ্ব ইতিহাসের একটি নির্মমতম রসিকতা। আর কোন জাতি এমন ন্যক্কারজনক অপমান সহ্য করেছে বলে জানা নেই। একাত্তরে বিস্ময়কর সাহস ও বীরত্ব দেখানো জাতিটি কেমন করে এমন ঘটনা হজম করতে পারে, পৃথিবীর মানুষ ভেবে আজও কূল পায়না। বলা বাহুল্য, এমন জাতি আবার শীঘ্রই গা ঝাড়া দিয়ে দাঁড়াবে, এমন কথা জোর দিয়ে বলার উপায় নেই। কারণ অপমান ও হীনমন্যতায় অভ্যস্ত মানুষের কাছে জাতীয় গৌরববোধের আকর্ষণ থাকে না। এর সাম্প্রতিকতম উদাহরণ চট্টগ্রামের মেয়র নির্বাচন। তথাকথিত স্বাধীনতা পক্ষের এক আজীবন কর্মী, শেষ মূহূর্তে বিশ্বসঘাতকতা করে স্বাধীনতার শত্রু শিবিরে যোগ দিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছে। সেখানে স্বাধীনতার ইজারা নেবার দাবীদারেরা পরাস্ত হয়েছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার দেশীবিদেশী শত্রুরা বাঙালীর একচ্ছত্র নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে সপরিবারে এবং ঠাণ্ডা মাথায় আওয়ামীলীগের শীর্ষনেতাদের হত্যা করে একাত্তর-পূর্বাবস্থা ফেরৎ আনার যে প্রক্রিয়া শুরু করেছিল, জামাতে ইসলামীর ক্ষমতায়নে তা অনেকাংশে সফল হয়েছে। ফলে করুণারও অযোগ্য বাংলাদেশ আবারও রাজনৈতিকভাবে গুরুতর আহত হয়ে রাস্তায় পড়ে গেছে। অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তার ভবিষ্যৎ। মজার কথা যে জাতির আত্মমর্যাদাবোধ খর্ব হয়, স্বাধীনতা থাকা আর না থাকার পার্থক্য তারা বোঝেনা। আশ্চর্য! এ জাতিরই একজন কবি বলেছিলেন, "স্বাধীনতাহীনতায় কে বাঁচিতে চায় রে কে বাঁচিতে চায়।"
    বর্তমান ভুল রাজনীতির চক্করে কোন জাতির স্বাধীনতা চট করে হাওয়া হয়ে যেতে পারেনা। এ কারণে আত্মঘাতী এবং আত্মনিগৃহীত বাঙালীর স্বাধীনতা হারানর আশু বিপদ না থাকলেও, তার প্রাণে বেঁচে থাকা নিয়েই এখন প্রচন্ড সংশয় দেখা দিয়েছে। দারিদ্র্যের ছোবল থেকে রক্ষা পেতে যে কয়েক মিলিয়ন বাঙালী বিভিন্ন দেশে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে, তারা ছাড়া বাকীদের শিয়রে পরিবেশ-দুষণের যমদূত এসে বসে আছে। বাংলাদেশের জমিতে, পানিতে আর্সেনিক, বাতাসে কার্বনের বিষ, নদীতে ব্যর্জ, পাহাড়ে ধ্বস; আবহাওয়া উদভ্রান্ত, হুট করে বন্যা, খরা, আইলা, সিডর, সুনামির তান্ডব; বিলুপ্ত হচ্ছে গাছ-গাছালি, পশু-পাখি মাছের বংশ। ওদিকে বিশ্ব-উষ্ণায়নের ফলে হাজার হাজার বছরের জমানো বরফ গলে সমুদ্রের জল বেড়ে যে কয়টি দেশের তীরভূমি ও নিন্মাঞ্চল ডুবে মানুষের জায়গাজমি, বসতবাটি, জনপ্রাণী চিরতরে হারিয়ে যাবে, বাংলাদেশ তার প্রথম দেশ। বাংলাদেশের এক তৃতীয়াংশ এলাকা সমুদ্রগর্ভে তলিয়ে গেলে প্রায় তিনকোটি মানুষ উদ্বাস্তু হয়ে পড়বে। এমন বিপদগুলির কথা মানুষ জানে বলেও মনে হয়না। নদী দখল করে, পাহাড় গিলে, জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে অহর্নিশি বিষ ছড়িয়ে যে স্বর্বভূক সম্পদখেকো মানুষগুলি পরিবেশ ধবংস করছে, তারা জানেই না যে, যে ডালে তারা বসে আছে, সে ডালই তারা কাটছে । একদিকে রাজনৈতিক শক্তি অক্ষম অন্যদিকে সামর্থবান মানুষগুলি অজ্ঞ এবং দস্যুবৃত্তি তাড়িত। তাহলে বাংলাদেশকে বাঁচাবে কে? কেবল মানচিত্র বা পতাকা প্রেমিক নয়, প্রকৃত দেশপ্রেমিক জনদরদী কিছু সুযোগ্য বাঙালী সন্তান ঠিক জায়গাটিতে হাত দিয়েছেন। একাত্তরে নিজেদের এবং সে সংগে দেশবাসীকে বাঁচাতে সাধারন মানুষই যুদ্ধে গিয়েছিল। এখনও ঐ সাধারন মানুষই কেবল দেশ, দেশের মাটি ও মানুষকে রক্ষা করতে পারে, অন্য কেউ নয়। তাঁরা শুরু করেন পরিবেশ আন্দোলন। টাকার গরম আর রাজনীতির ছ্যাকা থেকে এ আন্দোলনকে বঁচাতে তারা সম্পূর্নভাবে নিজেদের শ্রম ও সম্পদের উপর নির্ভর করতে থাকেন। এখন জনগন এ আন্দোলনের পক্ষে দাঁড়িয়েছে। এই সেদিন একটি জতীয় পুরস্কার দিয়ে বাপাকে স্বীকৃতি জানিয়েছে দেশের সরকারও। বাপা (Bangladesh Paribesh Andolon) এখন জনগনের একটি মঞ্চ এবং এর কন্ঠস্বরও জোরাল।
    BAPAর পেছনের শক্তি BEN (Bangladesh Environment Network). পৃথিবীর বহু দেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাঙালী বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, সমাজবিজ্ঞানী , কবি-সাহিত্যিক, সাংবাদিক এর সদস্য। ‘বেন’ এর কোন প্রশাসনিক অফিস কিংবা ব্যয় নেই। যেটুকু চাঁদা ওঠে, তার সবটাই দেশে বাপার কাছে পাঠান হয়। ওদিকে বাংলাদেশে স্বেচ্ছাসেবী পরিবেশ আন্দোলন একটি বিশাল কর্মকান্ডে পরিণত হওয়ায় তার নিয়মিত অর্থায়ন একটি অতীব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই ’বেন’ নিজেদের চাঁদার বাইরে প্রবাসী বাঙালীদের কাছ থেকেও অর্থসাহায্য নেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ’বেন’ এর এ সিদ্ধান্তে দেশের জন্য ভাল কিছু করতে সবসময় উন্মুখ প্রবাসীরা যথেষ্ট খুশি হবার কথা। কারণ সদলবলে বছরে একটা পিকনিক ও মৃতদের লাশ পাঠানর বাইরে এই প্রথম সত্যিকারের দেশপ্রেমিক একটি কাজে অংশ নেবার সুযোগ পাবেন প্রবাসীরা। প্রবাসীদের সাহায্য-সহযোগিতা যত বাড়বে, বাপা ও বেন এর হাত তত বেশী শক্তিশালী হবে; ব্যাপক জনগন পরিবেশ স¤¦ন্ধে সচেতন ও সতর্ক হবে। ফলে, দুঃখীনি জন্মভূমির মুখে একদিন হয়ত হাসি ফুটবে। জনগনই একাত্তরে স্বাধীনতা এনেছে, জনগনই বাঁচাবে বাংলার মাটি ও মানুষকে। আগ্রহী পাঠকেরা বেন সম্বন্ধে জানতে তাদের ওয়েভ সাইট দেখুন BEN-Center.org





    ।।এই লেখাটি সম্পর্কে আপনার মতামত দিন।।