সময়কে এইভাবে ভেঙে টুকরো টুকরো
|
সাহিত্য/কবিতা কালীকৃষ্ণ গুহ
ভ্রমণ তোমার লেখা শেষ হয়নি এখনো। লেখা শেষ হলে হয়তো সম্পূর্ণ বধির হয়ে যাবে তুমি। বধিরতা ঘিরে যত কোলাহল সবই আমাদের ভিতরে ফিরে আসবে একদিন। এখন দূর-দূরান্তরের পাহাড় আর সমুদ্র ঘিরে রেখেছে তোমাকে-- মেঘলা দিনের অচেনা আকাশ আর গাছপালা তোমাকে ঘিরে রেখেছে। এইসবের মাঝখান দিয়ে তুমি দীর্ঘ একটা ভ্রমণে বেরিয়েছ- অস্পষ্ট রাস্তাঘাট ধরে বিশ্বাস-অবিশ্বাসের ভিতর দিয়ে এগিয়ে চলেছ তুমি আর ফিরবে না ... একাকিত্ব যাকে জীবনের ভিতরে গ্রহণ করতে চেয়েছি একদিন তাকে আজ ত্যাগ করতে চাই। আজ ভোরবেলা উঠে আকস্মিক চিকোর শুনেছি। অমাবস্যা পার হয়ে এই রাত্রি এল। হিম হাওয়া। অন্তরিক্ষ জুড়ে যাতায়াত। ইতিহাসবোধ থেকে উঠে আসে গান মহাজাগতিক বিশ্বে, ধর্মবোধ, উন্মাদাগারের রাস্তা জুড়ে। তাকে সঙ্গে নিয়ে কিছু গান আমিও শুনেছি। আজ তাকে ত্যাগ করি একাকিত্বে। একাকিত্ব থেকে জাত কী-এক কুহক ঘিরে আসে- কুহকের ভিতরে তাকে ত্যাগ করি। তাকে ত্যাগ করে আকাশের দিকে ওই তাকিয়ে রয়েছি ... অরণ্য
সম্পর্কের কঙ্কাল তোমাকে ঝুলিয়ে রাখছি রোজ সম্পর্কের কঙ্কাল, তোমাকে ঝুলিয়ে রেখেছি ঘরে, আর প্রতিবর্ধন কাচে সাজানো বিছানায় শুয়ে শুয়ে ভাবছি সেই চোখ, যেখানে নির্বোধ মাকড়সা এখনও জাল বুনে চলেছে। একেকটা সকাল মাঝে মাঝেই থেমে যায়, আর আমি বালিশের তলা হাতড়ে বের করে আনি সেইসব মৃতের নাম, যারা নরক ভালবেসেছিল। কোন বিজ্ঞাপনের হাসি এভাবে ফিরে ফিরে আসে? কার গলার স্বর শুনে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যাই? বিস্মৃতি তুমি কোন খেলায় মেতেছো, পাহাড়ের ধারে দাঁড় করিয়ে দেখাতে চাইছো থেতলে যাওয়া লাশ। শেষকৃত্যানুষ্ঠানের সারিতে আমাকে দ্যাখোনি, সামনে ছিলাম, দেবতাদের তোষামোদি ধ্বনিতে। অপেক্ষার শেষ ঋতু, তোমাকে পেরেক দিয়ে গেঁথেছি, অতঃপর সেখানে ঝুলিয়েছি অন্ধ মানুষের ছবি। আমার বাক্সবন্দী রূপকথা, তোমার ঘুমহীনতার দায়ভার রেখে এসেছি পরকীয়া প্রিয় নারীর বিছানায়, আর বিশ্বস্ত স্বামীদের মত বসে থেকেছি বছরের পর’ বছর। বজ্রপাত, কালো মেঘসহ ছেয়ে ফ্যালো চরাচর, তান্ডবের মাঝে আমি উলঙ্গ হয়ে নাচতে চাই, যেন উন্মত্ত শরীর থেকে খসে যায় সম্পর্কের যাবতীয় গোপন হাড়। |
Contact Us